আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চর মাদারীপাড়া থেকে কারেন্টবাজার ও চন্ডিপুর ইউনিয়নের উজান বোচাগাড়ি গ্রামের তিস্তা ব্রীজ পয়েন্ট নামক স্থানে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙ্গাণ অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত তিস্তাগর্ভে বিলীন হয়েছে ৭’শ পরিবারের বসতভিটা। ভাঙ্গাণ অব্যাহত থাকায় নদীর বামতীর ও ডানতীরের বাঁধসহ বিস্তীর্ণ এলাকার বাস্তভিটা, আবাদি জমি, পুকুর, রাস্তা-ঘাট, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব কিছুই হুকমীর মুখে পড়েছে।
জানা যায়, গত ৩ সপ্তাহে এসব পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীভাঙ্গণ কবলিত মানুষজন ২ তীরের বেরীবাঁধসহ কুড়িগ্রামের চিলমারী, থানা হাট ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ভাঙ্গণ অব্যাহত থাকায় হুমকীর মুখে পড়েছে নদীর দু’পাড়ের বেরীবাঁধ, জনবসতিপূর্ণ পাড়া-গ্রাম, ফসলী জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ বিভিন্ন রাস্তা ঘাট। এ ব্যাপারে চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফুল মিয়া জানান, চন্ডিপুর ইউনিয়নের উজান বোচাগাড়ি মৌজায় অবস্থিত নির্মাণাধীন তিস্তাসেতু উপলক্ষে ব্রীজ পয়েন্ট নামক স্থানে যেসব পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে, সেগুলোর তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। একই সঙ্গে হুমকীর মুখে পড়েছে যেসব মানুষের বসতভিটা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সেগুলোর তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম সরকার জিমি জানান, এ ইউনিয়নের ৬ শতাধিক পরিবারের বাস্তুভিটা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। তিস্তানদীর তীব্র ভাঙ্গণে হুমকীর মুখে পড়েছে বিস্তীর্ণ এলাকার বসতভিটা, আবাদী জমি, রাস্তাঘাট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজার। নদী ভাঙ্গান কবলিত পরিবারগুলোর মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত দেড়’শ পরিবারকে শুকনো খাবারের প্যাকেট প্রদান করা হয়েছে। পৃথক পৃথকভাবে হরিপুর ও চন্ডিপুর ইউপি’র চেয়ারম্যানদ্বয় জানান, নদীভাঙ্গণ রোধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তাছাড়া, ভাঙ্গণ কবলিত পরিবারগুলোর জন্য কোন প্রাণ তৎপরতাও নেই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, নদী ভাঙ্গণ কবলিত ৩’শ ৪২ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। এসব খাবারের মধ্যে ছিল চাল ১০ কেজি, তেল ১ লিটার, লবণ ১ কেজি, চিনি ১ কেজি, চিড়া ৪ কেজি, লুডুস ৫’শ গ্রাম করে। ভাঙ্গণ অব্যাহত থাকায় নদী ভাঙ্গণ কবলিত পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদ্বয়ের কাছ থেকে তালিকা চাওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তালিকা পেলেই উর্দ্ধতন দপ্তরে চাহিদা পাঠানো হবে।