খবর৭১ঃ উজানের ঢল ও ভারতের গজল ডোবার সব কটি গেট খুলে দেওয়ায় পানির তোড়ে বুধবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ভেঙে গেছে হাতীবান্ধার ফ্লাড বাইপাস সড়কটি। এতে উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে তিস্তার পানি। রংপুর-বড়খাতা মহাসড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বুধবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড নিশ্চিত করেছেন। এদিকে সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে মুসুলধারে বৃষ্টিও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট (লাল সংকেত) জারি করে তিস্তার আশপাশের মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
জানা গেছে, তিস্তার পানি বাড়ায় লালমনিরহাটের তিন উপজেলার তিস্তার চর এলাকায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ধান ও ভুট্টাক্ষেত। পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় পরিবারগুলো উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। পানির তোড়ে তিস্তাপারের প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ও কয়েকশ হেক্টর জমির ফসলি ধান ক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পরিবারগুলোর মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ছয়টায় তিস্তার পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে ৫৩ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার, ৯টায় ওই পয়েন্টে ৫৩ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ৫৩ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপরে। তিস্তার পানি ক্রমেই বাড়ছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার চরগোবরধন, আরাজিছালাপাক ও চন্ডিমারী, সদর উপজেলার গোকুন্ডাসহ তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উপ-বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারণে অনেক ঘরবাড়ি বিলীন এবং পানিবন্দি হয়ে পড়া পরিবারগুলোর সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।