মিরসরাই প্রতিনিধিঃ
মিরসরাইয়ে খাল গর্ভে সড়ক বিলীন হওয়ায় চরম দুর্ভোগে তিন গ্রামের মানুষ।উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে বয়ে গেছে হিঙ্গুলী খাল। আর সেই হিঙ্গুলী খাল গর্ভে বিলীন হিঙ্গুলী ব্রীজ থেকে ইসলামপুর সড়ক প্রকাশ মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশা সড়কটি।
পূর্ব হিঙ্গুলী, মোহাম্মদপুর (তালতলা), ইসলামপুর এই তিন গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র গ্রামীণ সড়ক এটি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতের কারনে গত কয়েক বছরে ভাঙ্গনের ফলে রাস্তাটি বিলীন হওয়ার পর খালের পাশের বাড়িটিও খাল গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।
একসময় এই রাস্তা দিয়ে পিকাপ, মাইক্রোবাস, ভ্যান, অটোরিকশা সহ সকল প্রকার যান চলাচল করতো এবং ইসলামপুর থেকে এই গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে হিঙ্গুলী ব্রীজ হয়ে করেরহাট বাজারে আসা-যাওয়া করতো এখানকার স্থানীয় লোকজন। কিন্তু গত কয়েক বছরে ক্রমাগত ভাঙ্গনের ফলে বর্তমানে পায়ে হেঁটে চলাচল করাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। জনবহুল এলাকার প্রায় আড়াই হাজার লোকের চলাচলের এই ব্যস্ততম সড়কটি যেন মরণফাঁদ। সরেজমিন পরিদর্শনে এমনই চিত্র উঠে আসে।
খাল গর্ভে বিলীন হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা আমজাদ হোসেন সিপন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের জন্য কি কোন সহযোগিতা নেই, আমরা আর কতকাল এভাবে দুর্ভোগ ভোগান্তিতে কাটাবো, বেশ কয়েকবছর যাবৎ শুনতেছি অবহেলিত এই সড়কের কাজ হবে কিন্তু কবে আমাদের এই সড়কের কাজ হবে সেটা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা লিংকন বলেন, খাল গর্ভে বিলীন হওয়া সড়কটির কাজ জরুরি হয়ে গেছে।
নাসির উদ্দীন কোম্পানি নামে আরেক জন বলেন, কাজ হবে হবে করে বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে কিন্তু তারমধ্যে ব্যস্ততম সড়কটি পুরোপুরি খাল গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে তবুও কোন সুরাহা হয়নি।
স্কুল ছাত্রী ফারিয়া বলেন, এই ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে আতঙ্কে থাকি।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশা বলেন, সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে মাননীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন (এমপি) কে অবহিত করে এমপি মহোদয়ের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে।আশাকরি একটা রেজাল্ট পাবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন হারুন বলেন, বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং মাননীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের পক্ষ থেকে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। তবে সড়কের কাজের দায়িত্ব যদি এলজিইডি অথবা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে হতো তাহলে আরও অনেক আগে সংস্কার হয়ে যেতো। কারণ এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে হওয়ায় একটু সময় লাগতেছে, তবে আশাকরি অচিরেই কাজ হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের সার্কেল-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি নিশ্চিত হয়েছি এবং উপ-বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী আনিস হায়দার খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে যাবে এবং আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে চেষ্টা করবো।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপির পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে উক্ত সড়কটিকে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষাকল্পে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে।