লকডাউনে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন উলিপুরের শতাধিক বেদে পরিবার

0
430

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে লকডাউনে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন হেলিপ্যাডে আশ্রয় নেওয়া ৫০পরিবারের শতাধিক বেদে । বেদে মহিলারা বেশির ভাগ সিঙগা লাগানো, দাঁতের পোকা ফালানো এসব করে জীবিকা নির্বাহ করে। আর কিছু মহিলা মেয়েদের চুড়ি, ফিতা বিক্রি করে থাকে। আর বেদে পুরুষরা সাপের খেলা দেখা ও কড়ি বিক্রি করে। এভাবেই বেদে পরিবাররা কোনো রকমভাবে জীবন-যাপন করে আসছিল। লকডাউনের কারণে তাদের রোজগার এখন বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়েই থাকতে হয় অনেক সময়। সরকারের দেয়া ত্রাণ সহযোগিতা থেকেও বঞ্চিত এ বেদে পরিবারগুলো।

মঙ্গলবার সরেজমিনে উলিপুর হেলিপ্যাডে বেদে পরিবারের আশ্রয়স্থলে গিয়ে দেখা গেছে, আশ্রয় নেয়া প্রায় শতাধিক বেদে রয়েছে করুন পরিস্থিতিতে। লকডাউনে রোজগারের সকল পথ বন্ধ থাকায় এখন খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে নারী ও শিশুসহ বেদে পরিবারগুলো।

বেদে পরিবারগুলো বলেন, ‘আমাগো ছবি তুইল্লা কি হবে, মোরা গেরামে যাইতে পারি না। কোনো কাজ কাম নাই। হাটবাজারে গেলে সবাই খেদাইয়া (তাড়াইয়া) দেয়। বাল বাচ্চা লইয়া এহন কি খামু? করুনার (করোনা) ভয়ে মোগো সব রুটি রুজি বন্ধ। ছবি তুইল্লা নেন বালা কথা সরকারকে কইয়েন মোগো লইগা কিছু চাউল ডাইল (ত্রাণ) ব্যবস্থা কইরা দিতে।’
পরিবারগুলো আরো বলেন, জীবিকার তাগিদে বাপ-দাদার এ পেশায় যুক্ত আমরা দেশের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াই খাবারের সন্ধানে। এক সময় জীবন ছিল জলপথে নৌকায় নৌকায়। তাবিজ, ওষুধি গাছ-গাছড়া বিক্রি,সাপের খেলা, শিঙ্গালাগা, পরিমালা করে চলে আমাদের সংসার। স্থল পথে গ্রামে গ্রামে ঘুরে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় আমাদের। ওইসব গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় আমাদের আহার যোগে। করোনা ভাইরাসে লকডাউনের কারনে আমরা কোন গ্রামে ঢুকতে পারিনা। গ্রামে ঢুকলে মানুষ আমাদের তারিয়ে দেয়। ঘরে খাবার নেই। এখন আমরা কি করব বুঝতে পারছিনা।

বেদে সম্প্রদায়ের সরদার বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের থেকেও ভয়াবহ করোনা ভাইরাস ও লকডাউনে আমাদের তাবু বন্দি করে রেখেছে। লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে তাবুতে থাকতে হচ্ছে আমাদের। এখন কি খাব আমরা, সেটা নিয়েই চিন্তায় রয়েছি। এখন আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। এ অবস্থায় সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি আমাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন।

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, বেদে পরিবারগুলোর খোঁজ নিয়ে তাদের সহায়তা করা হবে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বেদে পরিবারগুলোর খোঁজখবর নিয়ে তাদের খাদ্য সহায়তার জন্য ইউএনও কে বলা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here