তালা প্রতিনিধি: জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সাতক্ষীরার তালায় এডিবির বরাদ্ধের অর্থায়নে ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীর উদাসীনতা ও অপরিকল্পিত পরিকল্পনার ফলে নষ্ট হবে সরকারের এই কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের রাস্তা। সীমানা নির্ধারণ না করে প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাওয়া রাস্তার জায়গা সার্ভে না করেই পিচ ও ইটের হেজিং নষ্ট করে নির্মান হচ্ছে এই ড্রেন। উপজেলা প্রশাসন রাস্তার জায়গা সার্ভে করে অবৈধ্য স্থাপনা উচ্ছেদ করে ড্রেন নির্মান করার নির্দেশ দিলেও তার কোন কর্ণপাত করেনি উপজেলা প্রকৌশলী রথিন্দ্র নাথ হালদার ।
এবিষয়ে তালা উপজেলা নাগরিক কমিটি একাধিকবার রাস্তা সার্ভে করে ড্রেন নির্মানের আবেদন করলেও বিষয়টি নিয়ে উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে উপজেলা প্রশাসনের।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সুত্রে জানা যায়, তালা প্রেসক্লাব মোড় হতে থানা এবং খাজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অভিমুখে ১ হাজার ১শ ৫ মিটার রাস্তা ১ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫শ ৬০ টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মানের কাজ গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে। যার উচ্চতা ও প্রস্থ ৩ ফুট। কাজটি তদারকি করছেন মেসার্স মুন্না এন্টারপ্রাইজ’র স্বত্ত¡াধিকারি হাবিবুর রহমান।
এব্যাপারে তালা উপজেলা নাগরিক কমিটির সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জানান, তালা উপজেলা সদরকে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে এডিবির অর্থায়নে ড্রেন নির্মান কাজ শুরু করা হয়েছে। ড্রেন নির্মানের আগে রাস্তা সার্ভে করে সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার পূর্বক কাজটি শুরু করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদনটি তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু গত দুই মাসেও বিষয়টি সমাধান হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা মীর জিল্লু রহমান জানান, রাস্তার দুই পাশের সরকারি সম্পত্তি স্থানীয় প্রভাবশালীরা ভবন, সীমানা প্রাচীর নির্মান করে দখলে আছেন। যার ফলে রাস্তার হেজিং কেটে ড্রেন নির্মান করা হচ্ছে। অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মান হলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থী, পথচারী এবং যানবহন চলাচলে বিঘœতা সৃষ্টি হবে।
এব্যাপারে মেসার্স মুন্না এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত¡াধিকারি মোঃ হাবিবুর রহমানের কাছে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করে ব্যস্ততা দেখিয়ে মুঠোফোনটি কেটে দেন।
উপজেলা প্রকৌশলী রথীন্দ্র নাথ হালদার জানান, যেমনি জায়গা পাব তেমনি ড্রেন করবো, জায়গা নেই ড্রেন করার কাজ বন্ধ। যতটুকু কাজ হবে সেই কাজের বিল ঠিকাদার পাবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার মশিয়ার রহমান জানান, ঠিকাদার ও প্রকৌশলী ইচ্ছা অনুযায়ী রোড ম্যাপ না করেই কাজ শুরু করেছে। ড্রেন সংশ্লিষ্ট এই রাস্তাটি তালা শহরে উঠার একমাত্র বাইপাস সড়ক। রাস্তার পাশে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। এসময় রোড ম্যাপ অনুযায়ী ড্রেন তিনিও নির্মানের দাবি জানান ।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তারিফ-উল-হাসান জানান, ড্রেন সংশ্লিষ্ট বিষয় মিটিং এ উপজেলা প্রকৌশলীকে সার্ভে করে সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার পূর্বক ড্রেন নির্মানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার জানান, রোড ম্যাপ অনুযায়ী ড্রেন নির্মান করতে হলে অসংখ্য স্থাপনা ভাঙতে হবে। তাতে ড্রেন নির্মানে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হবে। যার ফলে যেখানে যেমন জায়গা আছে সেখানে তেমন ড্রেন নির্মান করা হচ্ছে।
##