খবর৭১ঃ প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি।
শুক্রবার (৪ জুন) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ শঙ্কার কথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাকালে অর্থ সঙ্কটে পড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই করছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, ভবন ভাড়া অনেক ক্ষেত্রেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্থপ্রাপ্তির একমাত্র উৎস শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি। করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকায় টিউশন ফি পাওয়া যাচ্ছে না।
এইচএসসি পরীক্ষা সময়মতো না হওয়ায় শিক্ষার্থী সংকটও দেখা দিয়েছে। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’র ওপর ছাড় দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এমন সঙ্কটকালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর কর আরোপ করায় অনুমোদিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এসব কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর কর আরোপ না করার আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি। পাশাপাশি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়গুলোর অস্তিত্ব রক্ষায় সরকার প্রণোদনাসহ অন্যান্য সহায়তা দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
মালিক সমিতি বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আরোপের প্রস্তাব উচ্চ শিক্ষা প্রসারের অন্যতম অংশীদার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মহলের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত। ট্রাস্ট আইন, ১৮৮২ অনুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হওয়ায় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান করযোগ্য নয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি বলছে, সরকার প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি ও অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে, উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নামমাত্র খরচে লেখাপড়ার সুযোগ পায় শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’র ওপর নির্ভর করতে হয়। একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সরকার যেখানে মেধা সৃষ্টির লক্ষ্যে সর্বস্তরের শিক্ষা খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি দিয়ে থাকে, সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর কর আরোপ করা হলে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তা ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি করবে।
বর্তমানে দেশে ১০৭ টি অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৫ লাখ শিক্ষার্থী আছে। এতে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ গমনের প্রবণতা হ্রাসের পাশাপাশি মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও মেধা পাচার রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে বাংলাদেশে আসছে। এছাড়া, দেশে ও বিদেশে বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নতুন উদ্যোক্তা ও পেশাজীবী তৈরিসহ বিশাল জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রুপান্তরিত করার মাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।