খবর৭১ঃ ইসরাইলে ১২ বছরের প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহুর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন তারই একসময়কার সহকর্মী নাফতালি বেনেট।
কট্টর নেতানিয়াহু এক যুগ দেশ শাসন করেছেন। ফিলিস্তিনের নানা স্থানে ইহুদী বসতি স্থাপন করার ক্ষেত্রে কারও বাধা মানেননি নেতানিয়াহু।
সে নেতানিয়াহুকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হলে ফিলিস্তিনিদের খুশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ক্ষমতার পালাবদল নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন গাজা এবং পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা।
তারা মনে করেন, ইসরাইলে নেতা বদল হলেও নীতি বদল হবে বলে মনে হয় না। নেতানিয়াহুর জায়গায় যেই আসুক না কে তিনি ঠিকই তার পূর্বসূরির মতো ডানপন্থী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করবেন।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগ্যানিজেশন (পিএলও)-এর প্রতিনিধি বাসেম আল সালিহ বলেন, নেতানিয়াহুর চেয়ে বেনেট মোটেই কম উগ্র নন। তিনি সম্ভাব্য সরকারে কতটা কট্টর হবেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ করা সংগঠন হামাস বলছে, ইসরাইলে কে ক্ষমতায় তা নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, ডানপন্থী, বামপন্থী, মধ্যপন্থী—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের অনেকগুলো সরকারই দেখেছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের অধিকারের কথা এলেই তারা বৈরী হয়ে যায়। সব সরকারেরই বৈরী সম্প্রসারণবাদের নীতি দেখা গেছে।
বালাদ পার্টির নেতা সামি আবু শেহদেহ বলেন, পূর্ব জেরুজালেম ইস্যুর ক্ষেত্রে মূলত নেতানিয়াহু ‘ব্যক্তিগত’ নয় ইসরাইলের নীতিই অনুসরণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখন ইসরাইলের নীতি বদলাতে হবে, নেতা বদলে লাভ হবে না। নেতানিয়াহুর আগেও পরিস্থিতি খারাপ ছিল, নেতানিয়াহু যাওয়ার পরও পরিস্থিতি খারাপই থাকবে। এ কারণেই আমরা নতুন এই জোটের বিরোধীতা করছি।
পিএলওর নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য হানান আশ্রাবি বলেন, নেতানিয়াহুর বছরগুলোতে ‘বর্ণবাদ, উগ্রবাদ, সহিংসতা এবং অনাচার’ ছিল। তার সাবেক সহচর এ ধারা অব্যাহত রাখবে- এর বাইরে অন্য কিছু আশা করা যায় না।
গাজার সরকারি কর্মকর্তা আহমেদ রাজিক বলেন, ইসরাইলের নেতাদের মধ্যে আসলে পার্থক্য নেই। তারা তাদের দেশের জন্য ভালো বা মন্দ। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের বিষয় যখন আসে তখন ইসরাইলের সব নেতাই আমাদের জন্য খারাপ। সব ইসরাইলি নেতাই ফিলিস্তিনিদের অধিকার এবং ভূমি ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করে।
প্রসঙ্গত, ইসরাইলে বিরোধী দলগুলো সরকার গঠনে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে কট্টর বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুগের অবসান হতে চলেছে। নেতানিয়াহুর স্থলাভিষিক্ত হতে চলেছেন নাফতালি বেনেট।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন ইয়ামিনা পার্টির নাফতালি বেনেট। বেনেটের পর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন লাপিড। তিনি দায়িত্ব নেবেন ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট থেকে।
সরকার শপথ নেওয়ার আগে নেসেটে আস্থা ভোটের প্রয়োজন হবে। প্রেসিডেন্ট রিভলিন যতদ্রুত সম্ভব পার্লামেন্টে আস্থাভোটের আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন।
যদি বিরোধী এ জোট ১২০ আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিতে ব্যর্থ হয় তবে গত দুই বছরের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো আবারও ভোট আয়োজন করতে হবে দেশটিতে। নেসেটে ৬১ আসন পেলে তবেই সরকার গঠন করতে পারবে বিরোধী এ জোট।