উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
নড়াইলে সরকারি পুকুরের মধ্যে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার হেলিপ্যাড পুকুর খননের নামে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বালু উত্তোলনের লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ফুট বালু উত্তোলন করে স্থানীয়দের নিকট প্রতি ফুট ৪ টাকা দরে বক্রি করছেন। এর ফলে পুকুর সংলগ্ন দক্ষিণ পাশ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ঘেষা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধসে যাচ্ছে এবং হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। প্রশাসনের নাকের ডগায় এ অবৈধ কাজটি করলেও কোনো ভূমিকা নেই।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মাধ্যমে উপজেলা হেলিপ্যাড পুকুর খননের কাজ পায় স্থানীয় এক ঠিকাদার। এ প্রকল্পের জন্য ঘাট নির্মাণসহ মাটি খনন বাবদ প্রায় ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সিডিউল অনুযায়ী ওই পুকুর খননের কাজ করা হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এমনকি পুকুরের পাড় সঠিকভাবে বাধাঁ হয়নি। পুকুরের পাড়ের ওপরে কর্তনকৃত মাটির পরিমাণ চোখে পড়ার মত নয়।
এদিকে, ঠিকাদার রিয়াজ আলী পুকুর খননের নামে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগসাজশে মাটির তলদেশ থেকে শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে স্থানীয়দের নিকট বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার নয়া বারসাত গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে ইয়ার আলী মোল্যা,একই উপজেলার বলরামপুর গ্রামের মন্টু মোল্যার ছেলে আব্দুল হাকিমসহ ৪ জন ওই পুকুরের মাটির তলদেশ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। বালুর পাইপ বসিয়ে প্রায় ১ হাজার ফুট দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সরদার বাড়ির একটি গর্ত ভরাট করতে দেখা গেছে। এ বালু উত্তোলনের ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ আসে পাশের স্থাপনাগুলি হুমকির মুখে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, ড্রেজার মেশিন বসিয়ে যেভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এতে পুকুরটির পার্শ্ব একাধিক স্থাপনা ধসে যেতে পারে।
সরকারি পুকুরের বালু কেনো উত্তোলন করা হচ্ছে জানতে চাইলে বালু উত্তোলনকারী ঠিকাদার মো. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ মুঠোফোনে স্বীকার করে বলেন,‘মাটির তলদেশ থেকে মাটি কাটা বেআইনী। কিন্তু শ্রমিকদের খরচ চলার জন্য ড্রেজার মেশিন বসিয়ে এ বালু কাটা হচ্ছে।’
একই প্রসঙ্গে উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলী আহম্মেদ জানান,‘এলজিইডি থেকে পুকুর খনন কাজ চলছে। কত নিচ থেকে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে,তা আমার জানা নেই। পরবর্তীতে দেখে বলতে পারব । এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.নাজমুল হুদা যুগান্তরকে বলেন,‘এলজিইডি থেকে হেলিপ্যাড পুকুর খননের কাজ করা হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।