চুনারুঘাটে আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭৪টি ঘরের মধ্যে ৫৩টিতেই ঝুঁলছে তালা

0
233

মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘরে উঠতে অনাগ্রহী হবিগঞ্জে চুনারুঘাট উপজেলার আশ্রয়ন প্রকল্পের অনেক ভূমিহীন মানুষ। তাদের দাবি, যেই স্থানে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে এর ১০ কিলোমিটারের ভেতরে কোন কর্মসংস্থান নেই। এছাড়া, সেখানে নেই বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা। ওই স্থানে মাথার গোজার ঠাঁই থাকলেও রয়েছে সীমাহিন দূর্ভোগ। প্রকল্পের ৭৪টি ঘরের মধ্যে ৫৩টি ঘরের বাসিন্দাই তালা ঝুঁলিয়ে চলে গেছেন পূর্বের স্থানে।
জানা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি সারাদেশের সাথে চুনারুঘাট উপজেলার ইকরতলি আশ্রয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন ওই আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭৪টি ভুমিহীন পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল ঘরের চাবি। কিন্তু ঘরের চাবি ও কাগজপত্র নিয়ে চলে যাওয়ার পর অধিকাংশ পরিবারই আর সেখানে আসেননি। কেউ কেউ আসলেও কিছুদিন থাকার পর আবারও চলে গেছেন পূর্বের স্থানে। ৭৪টি পরিবারের মধ্যে মাত্র ২১টি ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছেন। বাকি ৫৩টি ঘরেই ঝুঁলছে তালা।
আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘর বরাদ্ধ পাওয়া ভূমিহীন আমিনুল ইসলাম, আলেয়া বেগম ও নুরুন্নাহার বেগমসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে জানান, আশে-পাশে কোন কর্মসংস্থান নেই। যাতায়াতের ব্যবস্থাও খুবই নাজুক। ৩ মাসেও দেয়া হয়নি বিদ্যুৎ সংযোগ। এছাড়া ৭৪টি পরিবারের জন্য রয়েছে মাত্র চারটি টিউবওয়েল। যেকারনে বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যাও প্রকট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ পাওয়া আরেক ভূমিহীন ব্যক্তি জানান, কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি তাদের কাছে বিদ্যুতের সংযোগ খরচ বাবদ ২ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি নিজেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশের কার্যালয়ের লোক বলে পরিচয় দেন। এসময় যারা তাকে টাকা দিয়েছে তাদেরকেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে।
উজ্জল মিয়া নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা অভিযোগ করে জানান, ঘর বরাদ্দে হয়েছে সীমাহিন অনিয়ম। স্থানীয়দের ঘর না দিয়ে দেয়া হয়েছে ১৫ কিলোমিটার দূরের কালেঙ্গা বনের বাসিন্দাদের। বনের ভেতরে যারা জুমচাষসহ বিভিন্ন চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। যে কারণে কর্মসংস্থানের অভাবে ওইসব লোকজন বন ছেড়ে ওই ঘরে উঠছেন না। এ বিষয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, ‘প্রকল্প এলাকায় বিদ্যুৎ আছে। তবে প্রকল্পে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য পৃথক কোন বরাদ্দ নেই। নিয়ম অনুযায়ি বাসিন্দাদেরকেই নিজ খরচে শুধুমাত্র সংযোগ নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য পরবর্তীতে আরো ২টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। এখন মোট ছয়টি টিউবওয়েল আছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here