পায়রা সমুদ্র বন্দর অপরেশনাল কার্যক্রমের এক বছরপূর্ণ

0
1068

আরিফ সুমন, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:
সীমিত অবকাঠামোয় নৌ পথে পন্য পরিবহনের মাধ্যমে অপরেশনাল কার্যক্রমের এক বছর পূর্ণ করলো দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা। এরমধ্যেই সরকারের কোষাগারে জমা পড়েছে রাজস্ব। যাকে সাফলতার নতুন হাতছানি মনে করছেন বিনিয়েগকারী এবং বন্দর সংশ্লিস্টরা। সকল অবকাঠামো নির্মান হলে এ বন্দর হবে এশিয়ার বৃহৎ বন্দর। হয়ে উঠবে দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি। এমন ধারনাও তাদের।
২০১৬ সালের ১৩ আগষ্ট স্বল্প পরিসরে পায়রা বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে এ বন্দরে পন্য খালাস করেছে ১৫টি বিদেশী পন্যবাহী জাহাজ। ১৩২০ মেঘাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা সেতুর নির্মানাধীন প্রকল্পের মালামাল নিয়ে এসছে এসব জাহাজ। বন্দরের নিরাপত্তা এবং দ্রুত পন্য খালাস প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে এসব বিদেশী জাহাজের প্রতিনিধিরা। বন্দর ব্যবহারকারী আমদানীকারকরাও একই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন । তবে চার লেন সড়কসহ পদ্মা সেতুর নিমর্তান কাজ সম্পন্ন হলে পন্য পরিবহনে আরো বেশি বন্দরের গতিশীলতা আসবে বলে মনে করছেন তারা। ইতিমধ্যেই বন্দরকে ঘিরে বিনিয়েগে এগিয়ে এসেছে দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান। বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত এলাকায় ফিরে এসেছে কর্ম চাঞ্চল্যতা। কর্মসংস্থানও বাড়ছে দিনদিন।
অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সাথে সংগতি রেখে দেশের সমুদ্রবন্দর কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার রাবনাবাদ চ্যানেলের তীরে নির্মিত হয়েছে দেশের তৃতীয় সমৃদ্র বন্দর পায়রা। ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মহা পরিকল্পনা নিয়ে পটুয়াখালীর রাবনাবাদ চ্যানেলের মোহনায় ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পায়রা বন্দরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৬ একর জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে জেটি ও অত্যাধুনিক কনটেইনার ক্যারিয়ার, রাজস্ব বোর্ড শুল্ক স্টেশন, নিরাপত্তা ভবন। চলছে চার লেন রাস্তা, অফিসসহ বিভিন্ন ভবন নির্মানের কাজ। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে শিপিং এজেন্ট, সিঅ্যান্ডএফ, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডও। বন্দর উন্নয়নে মুল চ্যানেলের গভীরতা ৮ মিটার থেকে ১২ মিটারে বৃব্দির জন্য বেলজিয়াম হারবার ইতিমধ্যে শুরু করেছে সমীক্ষার কাজ। লাইটারেজ জাহাজের নির্বিঘেœ চলাচলের জন্য বরিশালের হিজলা পর্যন্ত ৫মিটার ড্রেজিং সম্পন্ন হয়েছে।
এলএমজি টার্মিনাল নির্মানের সমীক্ষার কাজ করবে জাপানের একটি দল। রামনাবাদ চ্যনেলের লালুয়া ও ধুলাসার থেকে প্রায় সাত হাজার একর জমি আধিগ্রহনের কাজও প্রায় সম্পন্নের পথে। রেলপথ, বিমান বন্দর নির্মানসহ বন্দর নিরাপত্তায় নৌ-বাহিনীর ঘাটি নির্মান কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। পর্যায়ক্রমে এটি গভীর সমুদ্রবন্দরের রূপ নিয়ে চার লেনের মহাসড়ক ও ডাবল গেজ রেললাইনে যুক্ত হয়ে পরিপূর্ণভাবে চালু হবে ২০২৩ সালে। ২০২৩ সালে পূর্নাঙ্গ বন্দর হিসাবে চালুর পাশাপাশি বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমারের প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক করিডর বিসিআইএমের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে পায়রা এমন পরিকল্পনা নিয়ে বন্দর এলাকায় চলছে মহা কর্মযজ্ঞ।
বাড়তি সুবিধা আর নানা প্রণোদনা দিয়ে অবশেষে সোনালি স্বপ্নের দ্বার উম্মুক্ত হল দেশের তৃতীয় পায়রা সমুদ্র বন্দরের। পদ্মা সেতুর জন্য ৫৩ হাজার টন পাথর নিয়ে রামনাবাদ চ্যানেলের বহির্নোঙ্গরে পৌচেছে প্রথম বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি ফরচুন বার্ড। সড়ক ও রেলপথ ছাড়াই মাদার ভেসেল থেকে লাইটার জাহাজে নৌপথে পণ্য পরিবহনের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রার কর্যক্রম।
পটুয়াখালী জেলা রাজস্ব কর্মকর্তা ভূদেব চক্রবর্তী বলেন, শুধুমাত্র নৌ-পথকে ব্যবহার করে এর মাধ্যমে সরকার রাজস্ব আয় করেছে প্রায় ২১ কোটি টাকা। যা থেকে বন্দরের আয় হয়েছে প্রায় ৮৪ লক্ষ টাকা।
চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারে না এমন বড় জাহাজ জোয়ার-ভাটার অপেক্ষা না করে সারা বছরই ভিড়তে পারবে পায়রা বন্দরে। নেপাল ও ভুটান খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবে এই বন্দর। এমনকি বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমারের প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক করিডর বিসিআইএমের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে পায়রা এমন পরিকল্পনা নিয়ে বন্দর এলাকায় চলছে মহা কর্মযজ্ঞ। খবর ৭১/ এস;

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here