স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট: বাগেরহাট সদরের ডেমা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান ও তার মেয়েসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। ডেমা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হন ১৫ জন। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে চারজনকে। ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোরে তাদের আটক করা হয়। জব্দ করা হয় সাবেক চেয়ারম্যানের ব্যবহার করা একটি বন্দুক। আটক ব্যক্তিরা হলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তরফদার মকবুল মাস্টার ও তার মেয়ে মাকসুরা আক্তার, জসি মল্লিক এবং মল্লিক সুজাউদ্দৌলা রচি।
ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ডেমা গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সদস্য সজিব তরফদার ও আসন্ন নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী অহেদ মোস্তফা বাপ্পীর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর করা হয় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সংঘর্ষে গোলাগুলিতে দুই পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হন। দুই পক্ষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। আহতদের রাতেই বাগেরহাট সদর ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম এ তথ্য জানান, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে মোতায়েন রয়েছে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ডেমা ইউনিয়নে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আটজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সবার শরীরেই শর্টগানের গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
ইউপি সদস্য সজিব তরফদারের ভাই সোহেল তরফদার অভিযোগ করেন, ‘আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মিন্টু তরফদার ও বাপ্পি শেখসহ তাদের সমর্থকরা বাড়িতে আসে। এ সময় তারা আমার ভাইকে ডাকতে থাকে। ভাই বের না হলে আমার মা (সকিনা আক্তার) বাইরে বেরিয়ে ডাকার কারণ জানতে চান। ‘তখনই তারা গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে আমার মা এবং রিপন তরফদার, মেহেরুন বেগম, সোহেল ও সুজা তরফদার গুলিবিদ্ধ হন। তাদের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী অহেদ মোস্তফা বাপ্পি । তিনি বলেন, ‘আমি গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আজ সমর্থকদের নিয়ে দোয়া চাইতে বের হই। বিএনপি নেতা বর্তমান ইউপি সদস্য সজিবের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের ওপর অতর্কিত গুলিবর্ষণ করেন সজিব ও তার লোকজন। ‘এতে আমার সমর্থক রুহুল আমিন গাজী, নওশের শেখ, মাহফুজ শেখ, রবিউল ইসলাম, রিন্টু তরফদারসহ ১০ জন আহত হন।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাফিন মাহমুদ বলেন, ‘সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’
এদিকে চিতলমারী উপজেলা চত্বরে কলাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদশা মিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর সিদ্দিকী ও তার সমর্থকদের উপর হামলা হয়েছে। এতে আলমগীর সিদ্দিকীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইউপি নির্বাচন কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আগামী ১১ এপ্রিল বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় ৭৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭০টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।