কালুরঘাটে শ্রদ্ধা জানাবে বিএনপি

0
377

খবর ৭১: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের পাশে স্বাধীনতা পার্কে আগামী ২৭ মার্চ বিভাগীয় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল চট্টগ্রাম বিএনপি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভার দাওয়াতপত্রে সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি সভার আয়োজন বলে জানানো হয়।

কিন্তু ওই সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, সমাবেশ নয়; শহীদ জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে সমাবেশের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তারা।

তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, ৬ বা ১০ নেতা গিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন বিষয়টি এমন নয়; শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানই সমাবেশে পরিণত হবে। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দলে দলে শ্রদ্ধা জানাতে থাকবে।

জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ নয়; একইদিন একই স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগ। এতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ও আওয়ামী লীগ একাত্মতা ঘোষণা করেছে। ফলে সমাবেশ না করে শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। সমাবেশ না হলেও কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন তিনি।

সূত্র জানায়, কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের পাশে সমাবেশ ডাকায় মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনেছে নগরীর চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগ। বিএনপির ওই সমাবেশ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে ২৭ মার্চ একই স্থানে ছাত্র সমাবেশ, আলোচনাসভা, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা। স্থানীয় এমপি মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর কমান্ডার মোজাফফর আহমদের কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুন নবী শাহেদ গণমাধ্যমকে বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক দাবি করে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের পাশে সমাবেশের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি। স্বাধীনতার মাসে ইতিহাস বিকৃতির হীন চক্রান্ত আমরা রুখে দেব। ওইদিন আমাদের ছাত্র সমাবেশ, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। তাই সমাবেশ না করে কর্মসূচির পরিসর ছোট করা হয়েছে। কয়েকজন নেতা গিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন বিষয়টি এমন নয়; শ্রদ্ধা জ্ঞাপন কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন। একটি সভায় রূপ নিতে পারে।

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, সমাবেশে দলের মহাসচিব উপস্থিত থাকার কথা ছিল। সমাবেশ না হলেও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন কর্মসূচিতে তিনি উপস্থিত থাকবেন।

বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমাবেশ করার বিষয়ে শুরুতে অটল ছিলেন শীর্ষ নেতারা। কিন্তু একই স্থানে একইদিন ছাত্রলীগ কর্মসূচি দেওয়ার পর শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা হয়। সেখানে কোনো ধরনের ঝামেলায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কারণ বর্তমানে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। অনেকে এখনো কারাগারে। ফলে সমাবেশ করতে গিয়ে আবারও মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা এড়াতে চায়। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি সফল করতে চায় বিএনপি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here