খবর৭১ঃ জাতিসংঘ জানিয়েছে গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী পর্যন্ত কমপক্ষে ৭০জনকে হত্যা করেছে। জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত বিক্ষোভকারীদের হত্যায় সেনাবাহিনীর প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন। হত্যাসহ নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অত্যাচার ও নির্যাতনের প্রমাণ সামনে আসছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত মাসে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে বিক্ষোভ এবং ধর্মঘট চলছে। প্রতিবাদ ঠেকাতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা, নির্যাতন, গ্রেপ্তার, ইন্টারনেট বন্ধ, গণমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিলসহ সহিংস পথ বেছে নিয়েছে। তবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও সামরিক জান্তার আদেশ অমান্য করে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করেছে গণতন্ত্রপন্থীরা।
বৃহস্পতিবার মানবাধিকার তদন্তকারী টমাস অ্যান্ডুজ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে ‘ভয়ংকর সত্য’ তুলে ধরতে যেয়ে বলেন, অবৈধ এবং হত্যাকারীদের দ্বারা মিয়ানমার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
অ্যান্ডুজ বলেন, সেনা অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের অধিকাংশের বয়স ২৫ বছরের নিচে। সামরিক অভ্রুত্থানের পর আইন বাহির্ভূতভাবে দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে। দেশটিতে ধীরে ধীরে সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
জাতিসংঘের এই তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারী , চিকিৎসাকর্মী এবং নীরব দর্শকদের নির্বিচারে মারধর করছে এমন অসংখ্য ভিজুয়াল প্রমাণ আছে। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী পদ্ধতিগতভাবে এলাকায় গিয়ে মানুষের সম্পত্তি নষ্ট করছে, দোকান লুট করছে, মানুষের বাড়িতে নির্বিচারে গুলি করছে এবং আটক করছে তারও ভিডিও প্রমাণ আছে। এটা বিস্ময়কর যে, সিনিয়র নেতাদের নির্দেশে কিছু সেনা সদস্য মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে।
তবে গতকাল বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব চ্যান আয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উঠা সকল অভিযোগ প্রত্যাখান করেন। সহিংস বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ ধৈর্য্যের পরিচয় দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
লিখিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, মিয়ানমার বিশাল চ্যালেঞ্জের এবং নাজুক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী বিকাশমান গণতান্ত্রিক যাত্রা থামাতে চায় না বলেও মন্তব্য করে তিনি মিয়ানমার জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কাছ থেকে সাবভৌমত্ব, রাজনৈতিক স্বাধীনতা,আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে করণীয় জানতে চান।