খবর৭১ঃ
পরিবহন ও যোগাযোগ ভিত্তিক অনলাইন পত্রিকা “প্যাসেঞ্জার ভয়েস” এর রেল বিষয়ক প্রতিবেদক ইয়াছিন হক আরিফকে গত ৯ মার্চ সন্ধ্যা আনুমানিক ৭ টার সময় চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার শেরশাহ মোড় এলাকা থেকে পুলিশ পরিচয়ে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। প্রায় দুই দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি ৯ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধায় তাৎক্ষনিক ভাবে সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম-অপারেশন), উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) ও বায়েজিদ বোস্তামি থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করা হয়। পরবর্তীতে বায়েজিদ বোস্তামি থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়াছিন হককে সিআইডি ঢাকা কার্যালয়ের এএসপি জাহাঙ্গির আলম নামের এক কর্মকর্তা আটক করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কিন্তু প্রায় ২ দিন সময় পার হলেও এখনও পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন কিছুই জানানো হয়নি। এমনকি তাকে আদালতেও পাঠানো হয়নি। সিআইডির সদর কার্যালয়ে যোগাযোগ করেও ইয়াছিন হকের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করেনি কেউ। ইয়াছিন হকের বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত করতে আজ ১১ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বরাবরে লিখিত আবেদন করেছে প্যাসেঞ্জার ভয়েস কর্তৃপক্ষ। উঠিয়ে নেয়ার সময় পুলিশের মাইক্রো বাসটি চিহ্নিত করে ওই এলাকার লোকজন। ঢাকা মেট্রো-চ-১৯-২২৩৭ নং গাড়িতে তুলে ইয়াছিন হককে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তারা।
প্যাসেঞ্জার ভয়েস কর্তৃপক্ষের বক্তব্যঃ- সাম্প্রতিক সময়ে ইয়াছিন হক আরিফ বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণ্যিজিক কর্মকর্তা আনসার আলীর বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করেছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এই কর্মকর্তা রেলের বিভিন্ন স্থানে ইয়াছিনকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছিলেন বলে ইয়াছিন তার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম রেল ষ্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমারও তাকে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করেছে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সাবেক চীফ ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স ফকির মহিউদ্দিনের চট্টগ্রাম কারখানা বিষয়ক বিভিন্ন অনিয়মের কিছু তথ্য সম্পর্কে জানতে তথ্য অধিকার আইন মোতাবেক বাংলাদেশ রেলওয়ের ডাব্লিউএম/ক্যারেজ, পাহাড়তলী রাসেদ লতিফ বরাবরে আবেদন করেছিলেন। ফলে প্যাসেঞ্জার ভয়েস কর্তৃপক্ষ মনে করে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ইয়াছিন হককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেছিল তারা।
সিআইডির কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া এএসপি জাহাঙ্গির আলম প্রথমে নগরীর খুলশী এলাকা থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের কায়সার উদ্দিন নামের একজন ঠিকাদারকে আটক করে। পরে কায়সার উদ্দিনকে দিয়ে ইয়াছিনকে আটক করে তাকে ছেড়ে দেয় তারা।
প্যাসেঞ্জার ভয়েস কর্তৃপক্ষ আরো বলেন, ইয়াছিন যদি কোন অপরাধ বা অন্যায়ের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হউক। পুলিশ আটক করলে বিষয়টি নিশ্চিত করে তাকে আদালতে হাজির করার অনুরোধ করেন কর্তৃপক্ষ।
ইয়াছিন হক কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার ঘারমোড়া গ্রামের একে এম মঈনুল হক ও লাইলা ইয়াসমিন দম্পতির পুত্র।