খবর৭১ঃ
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে বসবাস করে আসছেন সাড়ে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু স্বেচ্ছায় নোয়াখালীর ভাসানচরে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে পঞ্চম দফার প্রথম অংশে ২০টি বাসে করে এক হাজার, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আরও ২০টি বাস এক হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু নিয়ে উখিয়া থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুইটি বাস, দুইটি অ্যাম্বুলেন্স যেতে দেখা যায়। এছাড়াও তাদের মালামাল বহন করছে ১১টি কার্গো ভ্যান।
এর আগে সোমবার ও মঙ্গলবার উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মিনিবাসে করে রোহিঙ্গাদের উখিয়া কলেজ মাঠের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়। সেখানে তাদের খাবার দিয়ে বাসে উঠার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বুধবার আরও ২ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া ছেড়ে যাবেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দৌজা বলেন, কয়েক ধাপে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেছেন। তারা সেখানে এই শিবিরগুলোর চেয়ে অনেক ভালো পরিবেশে রয়েছেন। এটি সরকারের একটি চলমান প্রক্রিয়া। পর্যায়ক্রমে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নেওয়া হবে ভাসানচরে।
রোহিঙ্গা মাঝিরা বলেন, স্বেচ্ছায় রাজি হয়ে রোহিঙ্গারা ভাসানচর গিয়ে সেখানকার পরিবেশ, থাকা খাওয়ার সুবিধা উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জানালে যারা যেতে রাজি হয়েছে। তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়।
রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ উল্লাহ বলেন, বর্তমান জীবনযাপনের চেয়ে অনেকটা উন্নত ভাসানচর। আমরা সাধারণ রোহিঙ্গা ভাইদের বোঝাচ্ছি যাতে তারা নিজ ইচ্ছায় ভাসানচর যান। সেখানে তারা ভালো থাকবেন। যারা ভাসানচরে গেছেন তারা অনেক ভালো আছেন বলে শুনেছি।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সরকারের দমন-পীড়নে নিপীড়িত ও বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে টেকনাফ ও উখিয়ার ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছেন। তাদের নিজ দেশে সসম্মানে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তবে এখানকার ঘিঞ্জি পরিবেশ থেকে আপাতত নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা চলে গেছেন।