মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ নির্বাচন সামলাতে ব্যস্ত প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই সুযোগে হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে জমজমাট হয়ে উঠেছে জুয়া। নির্বাচনের পাশাপাশি ঘন কুয়াশাকে কাজে লাগাচ্ছে জুয়ারিরা। জেলার প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিরাতেই হচ্ছে লাখ লাখ টাকার জুয়া। এসব আসরে প্রতিদিন জেলা ও জেলার বাহির থেকে গাড়ির বহর নিয়ে দলে দলে আসছে জুয়ারীরা।
অভিযোগ উঠেছে, এসব জুয়ার আসর থেকে পুলিশ প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের নামে আদায় হচ্ছে মোটা অংকের চাঁদা। এ অবস্থায় বিপথগামী হচ্ছে এলাকার যুবসমাজ। বাড়ছে নানা অপরাধ প্রবণতা। শুধু তাই নয়, জুয়ার আসরে বিক্রি হচ্ছে মদ, গাজা, ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ নানান সর্বনাশা মাদকদ্রব্যও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ, চুনারুঘাট, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ, বাহুবল ও লাখাইয়ে সবচেয়ে বেশি জুয়ার আসর বসে। এর মধ্যে সদর উপজেলার এড়ালিয়া, মাছুলিয়া, তেঘরিয়া, খোয়াই নদীর বাঁধে, বড় বহুলা ও গুঙ্গিয়ারজুড়ি হাওরে বসে জুয়ার আসর। এসব জুয়ার আসরে নেতৃত্ব দেন এলাকার প্রভাবশালীরা। এমনকি প্রশাসনের সাথে সখ্যতা রয়েছে এমন লোকজন এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও ওই এলাকাগুলোতে জুয়ার আসরের লিডিং দিয়ে থাকেন
বানিয়াচং উপজেলার মধ্যে সুবিদপুর, নতুন নোয়াগাঁও, কাগাপাশা, পাতারিয়া, ইকরাম, সাঙ্গর ও বানিয়াচং সদরের বেশ কিছু এলাকায় জুয়ার আসর বসে। ওই এলাকাগুলোতে নেতৃত্ব দেন প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সখ্যতা থাকা প্রভাবশালীরা চুনারুঘাট উপজেলার বহরমপুর, ইছাকুটা, কালিশিরি, শানখলা, দেউন্দি, উবাহাটা, ঝিকুয়া, নোয়াগাঁও, বালিয়ারি, শায়েস্তাগঞ্জ রেল জংশন, নিজগাঁও, শাহজী বাজার, অলিপুরের কলোনি, কাশিপুর ও বিভিন্ন চা বাগান ও টিলাতে জুয়ার আসর বসে। তিন তাস, ওয়ানটেন, চক্রবোর্ড, গাফলাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে রাতভর চলে জুয়ার জমজমাট আড্ডা। এছাড়া নতুনব্রিজ গোলচত্বর এলাকার বেশ কিছু বাসা-বাড়ি ও হোটেলে নিয়মিত বসে জুয়ার আসর। এসব এলাকায় জুয়ার লিডিং দেন সুরুজ আলী নামে এক চিহ্নিত জুয়ারি। এছাড়া, বাহুবল উপজেলার মিরপুরসহ বিভিন্ন স্পটে একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি ও কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তির নেতৃত্বে চলে জুয়া
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় জুয়াড়িরা শুধু খেলাতেই সীমাবন্ধ থাকেন না। সেই সাথে বিভিন্ন মাদক ও অনৈতিক কর্মকান্ডও চালিয়ে থাকে।
এসব জুয়ার আসরে প্রতিনিয়ত যোগ দিচ্ছে নতুন নতুন কিশোর ও তরুণরা। আবার কিছু কিছু এলাকায় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও জড়িয়ে পড়ছেন জুয়া ও মাদকের খড়াল গ্রাসে। এসব শিক্ষার্থীরা জুয়ার টাকা জোগার করতে জড়িয়ে পড়ছেন চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময় জুয়ার আসর বসে জানিয়ে প্রশাসনকে তথ্য দিলেও তারা কোন কর্ণপাত করে না। জুয়াড়িদের সাথে স্থানীয় প্রশাসনের আতাত থাকার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে দাবি করছেন তারা শায়েস্তাগঞ্জের একাধিক ব্যক্তি নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, স্থানীয় সরকার দলীয় পাতি নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, চুনারুঘাট থানা পুলিশ, শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ ও হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের নামে জুয়ার বোর্ড থেকে প্রতিদিন আদায় করা হয় লাখ লাখ টাকা।