খবর৭১ঃ
গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করা ৬০ শতাংশ নারী করোনার সময় আর্থিক সংকট ও দুর্দশায় দিন কাটিয়েছেন। ৯০ শতাংশ পোশাককর্মী করোনার সময় কোনো সহযোগিতা পাননি। করোনার সময় তারা মানসিকভাবে ভীত ছিলেন। ঋণ গ্রস্ততার হার বাড়ার কারণে অনেকে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেছেন। এসব নিয়ে এখন সবাই মিলে কাজ করা দরকার।
গতকাল বুধবার রাতে অনলাইনে প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও ঢাকা ট্রিবিউন আয়োজিত ‘করোনার সময় পোশাককর্মীদের অবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব তথ্য উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের আবদুল্লাহ আল মামুন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি করোনার সময় নারী পোশাককর্মীদের ওপর একটি সমীক্ষা চালান। যেখানে করোনার সময় নারী পোশাককর্মীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে আসে। সমীক্ষা অনুযায়ী ৩০ শতাংশ নারী পোশাককর্মী বলছেন, ৫৩ শতাংশ রোজগার করোনার আগের তুলনায় তাদের কমে গেছে। মাত্র ১০ শতাংশ ট্রেড ইউনিয়ন থেকে সাহায্য পেয়েছেন তারা।
পোশাককর্মীদের প্রতিনিধি নাজমা আক্তার বলেন, ‘করোনার সময় গার্মেন্টস মালিকরা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। আমাদের এখন দেখতে হয় কতটুকু শ্রম আইন বাস্তবায়ন হয়েছে। একজন নারী পোশাককর্মী বেশি বয়স পর্যন্ত কাজ করতে পারেন না। কারণ তিনি অল্প বয়সেই বেশি কাজের চাপের কারণে শারীরিকভাবে বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন। অমানবিকভাবে তারা কাজ করলেও তাদের সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। গার্মেন্টস মালিকদের সামাজিক মর্যাদা ও জীবনধারণ অনেক উন্নত, অথচ পোশাককর্মীদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। বিজিএমএই গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন, তবে তারা কি পোশাককর্মীদের জন্য কখনো ভেবেছে? তারা তাদের সদস্যদের জন্যই শুধু কাজ করে। এমনকি গর্ভবতী মেয়েদেরও পাওনাও ঠিকমতো দেওয়া হয়নি।
অনুষ্ঠানে বিজিএমইর সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘আমাদের তো মাস শেষে বেতন দিতে হয়। এই মহামারিতে অনেক ছোট ফ্যাক্টরি শেষ হয়ে গেছে। আপনারা উল্লেখ করেছেন আড়াই লাখ কর্মী তাদের চাকরি হারিয়েছেন। কিন্তু সেটি পুরো বাংলাদেশের। গার্মেন্টস সেক্টরে চাকরি হারিয়েছে প্রায় ৭৬ হাজার। এর মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন চাকরিতেও যোগ দিয়েছেন। আমরাও করোনার সময় কর্মীদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। বেশির ভাগ গার্মেন্টসই বোনাস নিশ্চিত করেছে। বায়াররা তো দাম কমিয়েছে শুধু। ট্রেড ইউনিয়ন তো কখনো দাম বাড়ানোর বিষয়ে বলতে শুনিনি। আমরা কর্মীদের স্বাস্থ্যবিষয়ে সচেতন ছিলাম। অনুষ্ঠানে আইএলওর প্রতিনিধি শামীমা সুলতানা বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী কর্মী কাজ করেন। করোনা নারী কর্মীদের খারাপ পরিস্থিতি সামনে নিয়ে এসেছে। তাই নারী কর্মীদের সুযোগসুবিধা নিশ্চিতে আইএলও সবার সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে চায়।