খবর৭১ঃ
মোঃ আব্দুস সালাম, সাভার প্রতিনিধিঃ সাভারের আশুলিয়ায় তাজরীনের অগ্নিকাণ্ডে আহত শ্রমিক শারমিন (৩০) মারা গেছেন। স্বজনের দাবি চিকিৎসা অভাবেই তার মৃত্য হয়। তিনি ওই দুর্ঘটনায় ফুসফুস জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। বুধবার (২৫ নভেম্বর) সকালে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর মধ্যপাড়ার টানপাড়া তাওয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় নিজ বাসভবনে মারা যায়।
নিহত শারমিন একই এলাকার দিনমজুর করিম ওরফে কালুর স্ত্রী। তিনি তাজরীন ফ্যাশনের ৪ তলায় অপারেটর হিসাবে কাজ করতেন। তার কার্ড নম্বর ছিলো-২২৯৫। নিহতের আহত সহকর্মী নাসিমা আক্তার জানান, শারমিন তাদের লাইনেই কাজ করতেন। সেদিন আগুনের ঘটনা ঘটলে সন্তান সম্ভাবা শারমিন জীবন বাঁচানোর তাগিদে ছোটাছুটি শুরু করেন। তিনি তড়িঘড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় সিঁড়িতেই পড়ে যায়। এসময় অন্যান্য শ্রমিকের পায়ের নিচে পড়ে যান। শ্রমিকের পদদলিত হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে নিজ খরচে চিকিৎসা করেন তিনি। অবস্থার অবনতি হলে হৃদরোগ ইনিস্টিউটে নিলে অর্থ অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন নি। দীর্ঘদিন পরে বিলস্ এর সহযোগিতায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কিছুদিন চিকিৎসা হয়। পরে আনরেজিস্টার্ডের অজুহাত দেখিয়ে তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই চিকিৎসাসেবা বন্ধ ছিল।
অনুদান ও ক্ষতিপুরণ পেলে হয়তো অকালেই এই শ্রমিক মারা যেতো না। নিহতের স্বামী করিম ওরফে কালু জানান, দুর্ঘটনার পরে টঙ্গীতে ডেকে নিয়ে ৩ মাসের বেতন দেয় কতৃপক্ষ। এর পরে তাকে কোন ধরনের সহযোগিতা করা হয় নি। এমনকি চিকিৎসা সেবাও নিশ্চিত করা হয় নি। আমার স্ত্রীর ফুসফুসে রক্ত জমেছিলো। আমি দিনমজুরের কাজ করি, এই আয় দিয়ে তার চিকিৎসা করা সম্ভব হয় নি। আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফেডারেশন, এনজিওর কাছে গিয়েছি কিন্তু কোন ধরনের সহযোগিতা পাই নি। এ ব্যাপারে গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়ার্কার্স লীগের সাভার আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি রাকিবুল হাসান সোহাগ বলেন, তাজরিনের আহত শ্রমিক শারমিন বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে।
তার দুটি সন্তান রয়েছে, এই সন্তানের যাবতীয় দায়িত্বভার সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিতে হবে এবং তার যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান তিনি। একই সাথে আহত শ্রমিকরা যাতে আর বিনা চিকিৎসায় মারা না যায় সে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাই। আর একটা শ্রমিকও যদি বিনা চিকিৎসা মারা যায় তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এড়াতে পারবো না।