মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর প্রতিনিধি :
নীলফামারীর সৈয়দপুরে সংখ্যালঘু দরিদ্র এক পরিবারকে বাপ দাদার ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শহরের নতুন বাবুপাড়ায় উচ্ছেদকৃত বাড়ির সামনে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন বাপ- দাদার ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হওয়া শ্রী জহরলাল শীল তাঁর পরিবারের সদস্যরা। জহরলাল শীল পেশায় একজন নাপিত (নরসুন্দর)। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শহরের উল্লিখিত এলাকার জহরলাল শীলের দাদা ছিলেন স্বর্গীয় নারায়ণ চন্দ্র শীল। দাদা স্বর্গীয় নারায়ণ চন্দ্র শীল ও বাবা স্বর্গীয় রামকরণ শীল ক্ষৌরকার্য করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আর ওই সময়ে এলাকার জমিদার ছিলেন পুরণচাদ নওহাটা ও জ্ঞানচাঁদ নাহাটা। সে সময় ওই জমিদাররা সৈয়দপুর শহরের কয়া মৌজার সিএস ৫৫ ও এসএ ৪৬ খতিয়ানভুক্ত সিএস ৪৮৩১ ও এসএ ৫২৮৬ দাগের ৪৬ শতক জমির মধ্যে ৪০ শতকে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে কাচারিঘর এবং কর্মচারিদের কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার ঘর নির্মাণ করেছিলেন।
আর জমিদার ও তাদের কর্মচারীরা যখন খাজনা আদায়ের জন্য কাচারীতে আসতো, তখন তাদেরও ক্ষৌরকার্য সম্পাদন করতেন নাপিত নারায়ণ চন্দ্র শীল। সেই সময় কাচারি ঘরে পাশের অবশিষ্ট সোয়া ছয় শতক জমিতে নারায়ণ চন্দ্রশীলকে বাড়িঘর তৈরি করে বসবাস করতে মৌখিকভাবে অনুমতি দেয় জমিদার। নিঃস্কর প্রজা হিসাবে বংশ পরম্পরায় নারায়ণ চন্দ্রশীলের পরিবার সেখানেই বসবাস করে আসছেন। বিগত ইংরেজি আনুমানিক ১৯৩০ সাল থেকে তারা ওই জমিতে বসবাস করছেন। কিন্তু বিএস রেকর্ডে দখলিকার বা ভূমি মালিক হিসাবে নারায়ণ চন্দ্র শীলের উত্তরাধিকারি জহরলাল শীলের নাম প্রচারিত হয়নি। সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়েছে ওই জমি। বিএস রেকর্ডে জমির নতুন দাগ নম্বর হয়েছে ৩১৫৩২।
বিষয়টি জানার পর জমির ভোগদখলকারী শ্রী জহরলাল শীল গত ২৪ আগষ্ট বিএস রেকর্ড সংশোধনের জন্য নীলফামারীর বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
এমতাবস্থায় গত ১ নভেম্বর সৈয়দপুর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে খাস জমি উল্লেখ করে জমির ভোগদখলকারী জহরলাল শীলের পরিবারকে উচ্ছেদ করে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে তাদের বাড়ির বৈদ্যুতিক সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ অবস্থায় সংখ্যালঘু দরিদ্র পরিবারটি ভিটে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছে।বর্তমানে তারা খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করছেন। দিশেহারা পরিবারটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।