রাব্বুল ইসলাম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
পাথরের পরিবর্তে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের শৈলকুপা অংশ হচ্ছে ইটের খোয়া দিয়ে ৭ মাস পর সংস্কার কাজে ফিরে নিয়ম না থাকলেও পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে মহাসড়ক সংস্কার করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঘটনাটি ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহসড়কের ঝিনাইদহের শৈলকুপার ভাটই বাজার এলাকায়। মহাসড়ক সংস্কারে পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দেওয়ার কোন নিয়ম নেই । তবে ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে জানা যায়, বড় গর্ত সংস্কারে তাদের কোন অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তারা ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের অনুমোতি নিয়ে খোয়া দিয়ে এ কাজ করছেন। এদিকে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের শৈলকুপা অংশে দায়িত্বে থাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা বলেন তারা এ ধরনের কোন অনুমোতি দেননি বরং ঐ অংশের কাজ তিনি বন্ধ করতে বলেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উপরে ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট কায়দায় সংস্কার করছে। যা দুই তিন মাসের মধ্যে এ মহাসড়কটি ফিরবে আবার আগের অবস্থায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ঝিনাইদহ থেকে শৈলকুপার শেষ অংশ ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় পর্যন্ত ২০ কোটি টাকার সংস্কার কার্যাদেশ পায় ঢাকা ভিত্তিক আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন ফার্ম। চলতি বছরের গত জানুয়ারী থেকে তারা এ মহাসড়কের সংস্কার কাজ শুরু করার পর থেকে অনিয়মের অভিযোগে কয়েকবার মানববন্ধন করে এলাকাবাসি। এরপর সংস্কারের মাঝ পথে মার্চ মাসে করোনাকালীন সময়ে কাজ বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ ৭ মাস সংস্কারের কাজ বন্ধ থাকার পর সড়ক বিভাগের একের পর এক চিঠির পর গত মাসে সড়ক সংস্কারের ফেরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করা অংশের ভাটই বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ী ইমরান এন্টারপ্রাইজের ইমরান হোসেন বলেন, প্রথমে যখন মহাসড়ক সংস্কারের আসে এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তখন থেকেই ভোগান্তি। ৭ মাস কাজ বন্ধ থাকার পর আবার সংস্কার কাজ শুরু করে তারা। এবার পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে । এটা দেখার কেউ নেই। তারা গভীর রাতে কাজ করে যখন সরকারের কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি এখানে থাকে না। ২/৩ মাসের মধ্যে খুলনা-ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়ার এই মহাসড়ক আবার চলাচলের অনুপযোগী হবে বলে তিনি জানান।
শৈলকুপার ভাটই এলাকার নাকোল গ্রামের তরিকুল ইসলাম বলেন, ২০ কোটি টাকার মহাসড়ক সংস্কার যদি পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে হয় আর এটা দেখার কেউ না থাকে তা হলে এর থেকে দু:খজনক ঘটনা আর কি হতে পারে? শৈলকুপার ভাটই বাজারের ব্যবসায়ী স্বপন কর্মকার বলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যে ভাবে কাজ করছে আপনি দেখলে বুঝতে পারবেন না যে কি পরিমান অনিয়ম করছে। এ যেন উপরে ফিঠফাট ভিতরে সদরঘাট।
ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের সংস্কার কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বড় বড় গর্ত সংস্কারে তাদের কোন অর্থ বরাদ্দ নেই এ কারণে তারা গর্তে ইটের খোয়া দিয়ে তার উপর পাথর দিচ্ছেন। আর এ কাজটি তারা ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনুমতি নিয়েই করছেন।
ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের সংস্কার কাজের শৈলকুপা অংশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলহাজ গোলাম সরোয়ার জানান, মহাসড়ক সংস্কারে পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দেওয়ার কোন বিধান নেই। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ইটের খোয়া দিয়ে সড়ক সংস্কারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাদের এ কথা ঠিক না। বরং যে স্থানে তারা এ কাজ করছে সেখানে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি বলে জানান।