মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর প্রতিনিধি:
সৈয়দপুরে আগুনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শহরের অর্ধশতাধিক হোটেল- রেঁস্তোরা। আগুন ধরলে নেভানোর যথাযথ ব্যবস্থা নেই অনেক হোটেল রেঁস্তোরায়। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র (ফায়ার এক্সটিংগুইশার) রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও অধিকাংশ হোটেল-রেঁস্তোরায় তা নেই। ফলে প্রতিদিন অগ্নিঝুঁকি নিয়ে হোটেল রেঁস্তোরায় খাবার খাচ্ছেন অসংখ্য ভোক্তা।
জানা যায়, জনবহুল শহরে নামিদামি অর্ধশতাধিক হোটেল-রেঁস্তোরা রয়েছে। এসব হোটেল-রেঁস্তোরায় রান্নার কাজে দিনে রাতে প্রায় ১৭/১৮ ঘন্টা চুলা জ্বালানো হয়। আর জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা হয় গ্যাস সিলিন্ডার। অথচ সিংহভাগ হোটেল-রেঁস্তোরায় আগুন নেভানোর অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র রাখা নেই। অথচ ফায়ার সার্ভিস বিধিমালায় অগ্নিঝুঁকিপূণ প্রতিষ্ঠানে আগুন নেভানোর জন্য অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু শহরের বেশীরভাগ হোটেল রেঁস্তোরা মালিক নিয়ম অমান্য করে ব্যবসা করছেন।
সর্বশেষ গত সোমবার শহরের পাঁচমাথা মোড়ে শাহী হোটেলে গ্যাস সিলিন্ডারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। তবে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় শহর। এ হোটেলে আগুন নেভানোর কোন অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ছিলনা। এ ঘটনায় হোটেল-রেঁস্তোরায় আগুন নেভানোর জন্য অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র না থাকার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। ভোক্তাদের অভিযোগ, হোটেল-রেঁস্তোরা মালিকরা ভোক্তাদের ঝুঁকির মধ্যে রেখে বছরের পর বছর ব্যবসা করছেন। যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ভোক্তারা ঝুঁকি কমাতে হোটেল-রেঁস্তোরায় অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র রাখা নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। সরেজমিনে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক, শহীদ তুলশীরাম সড়ক, শেরে বাংলা সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, ও সৈয়দপুর প্লাজা মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, শহরের নামিদামি হোটেল–রেঁস্তোরা এসব সড়ক ও মার্কেট ঘিরে গড়ে উঠেছে। অথচ দেখা যায় অধিকাংশ হোটেল-রেঁস্তোরায় অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র নেই। ভোক্তারা অগ্নিঝুঁকি নিয়ে খাবার খেতে বাধ্য হচ্ছেন। দু’একটি হোটেল-রেঁস্তোরায় অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রের দেখা মিললেও তার ব্যবহার জানে না হোটেল শ্রমিকরা। হোটেল-রেঁস্তোরায় অগ্নিঝুঁকি প্রসঙ্গে শহরের বিশিষ্টজনরা জানান, মূল শহরে আগুন নেভানোর স্থায়ী কোন জলাধার না থাকায় গোটা বাজার অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে। এ অবস্থায় হোটেল-রেঁস্তোরায় জ্বালানী হিসাবে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ অধিকাংশ এসব প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র নেই। এটি অগ্নিকান্ড সংঘটনের জন্য খুবই বিপদজনক। এজন্য তারা স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস দপ্তরকে উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দেন।
জানতে চাইলে, বাংলাদেশ হোটেল রেস্তোঁরা মালিক সমিতি উপজেলা শাখার সভাপতি মো. বখতিয়ার রহমান জানান, সমিতিভূক্ত ৫০টি হোটেল-রেস্তোঁরা রয়েছে। তবে এর বাইরে শতাধিক হোটেল রয়েছে। হোটেলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করতে ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে সব হোটেল-রেস্তাঁরা মালিককে অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু এখনও অনেকে তা মানছে না। সমিতির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ফের তাগাদা দেয়া হবে।