নলছিটিতে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা

0
386
নলছিটিতে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা

রতন আচার্য্য,ঝালকাঠি প্রতিনিধি :
যোগ্যদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে বিবাহিত, ছাত্রত্ব নেই, ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও ঢাকায় বাস করেন এমন যুবকদের দিয়ে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সকাল ১১টায় নলছিটি থানা সড়কের একটি বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা। নতুন আহ্বায়ক কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে পাল্টা কমিটি গঠনের হুশিয়ারি দেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ছাত্রদল নেতা তাইসুর খান বাপ্পি। এসময় উপজেলা ছাত্রদলের পদ বঞ্চিত বড় একটি অংশ উপস্থিত ছিলেন। নতুন কমিটির কয়েকজন যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য পদত্যাগ করবেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। অবিলম্বে এ কমিটি বাতিল করে উপজেলা বিএনপির মতামতের ভিত্তিতে নতুন করে কমিটি গঠনেরও দাবি জানানো হয়। গত ২৯ আগস্ট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ কমিটি অনুমোদন করে।

এতে সাইদুল ইসলাম রনিকে আহ্বায়ক ও সুজন খানকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে। এতে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় ৯ জনকে। বিষয়টি এতো দিন প্রকাশ পায়নি। বৃহস্পতিবার রাতে নতুন কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের ফেসবুকে কমিটি গঠনের একটি পোস্ট দেখে বিষয়টি জানতে পারে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। এর পরেই শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ বেশিরভাগ ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা রয়েছে ২০০৫ সালের নিচে এসএসসি পাস কাউকে ছাত্রদলের পদ দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি ছাত্রত্ব নেই ও বিবাহিত এমন কাউকেও রাখা যাবে না। উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠন করতে হবে। অথচ জেলা ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ টাকার বিনিময়ে যোগ্যদের বাদ দিয়ে বিবাহিত, ছাত্রত্ব নেই, ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও ঢাকায় বাস করেন এমন যুবকদের দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে। এর পেছনে ঢাকায় বসবাসকারী ঝালকাঠির বাসিন্দা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নুর ইন্দন রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ জানান, নতুন কমিটির আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম রনি বসববাস করেন। তিনি ২০০৩ সালে এসএসসি পাস করেন। রানাপাশা ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে প্রত্যয়ন দিয়েছেন। চার নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল ২০০৩ সালে এসএসসি পাস করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নে। পাঁচ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন খান বিবাহিত। ছয় নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মিরাজুল ইসলাম কখনো ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সুজন গাজী দপদপিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে মঞ্চে দেখা গেছে তাকে। নিজের ফেসবুকে সেইসব ছবিও আপলোড করেছিলেন সুজন। এছাড়াও কমিটির বেশিরভাগ সদস্যরা অযোগ্য বলেও দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। অবিলম্বে এ কমিটি বাতিল করা না হলে পাল্টা কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস সরদার দিপু বলেন, আহ্বায়ক কমিটিতে যোগ্যরা স্থান পেয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সঠিক নয়।

নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান হেলাল বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ছাত্রদলের কেন্দ্র থেকে আমাদের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা একটি কমিটির সুপারিশ করেছি। কিন্তু তা উপেক্ষা করে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। যারা এলাকায় থাকে না, যাদের কোন অবস্থান নেই সে ধরণের লোক দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা যে তালিকা পাঠিয়েছি, তা দিয়েই ছাত্রদলের কার্যক্রম চালাবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here