খবর৭১ঃ কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এর ৩ সদস্যকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার (১৮আগস্ট) হত্যায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ্ রিমান্ড আবেদন শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ তথ্যটি নিশ্চিত করেন। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রিমান্ড মঞ্জুর করা তিনজন হলেন- এপিবিএন এর সাব ইন্সপেক্টর শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও কনস্টেবল মো. আবদুল্লাহ।
আদালতের আইনজীবী বাপ্পী শর্মা জানান, এপিবিএনের এ তিন সদস্যকে সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিলো। তাদেরকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে সিনহা হত্যায় দায়েরকৃত জিআর ৭০৩/২০২০ (টেকনাফ) মামলায় মঙ্গলবার (১৮আগস্ট) গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
কখন থেকে এ রিমান্ড কার্যকর করা হবে এমন প্রশ্নে মামলার আইও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘সুবিধাজনক সময়ে তা কার্যকর করা হবে।’
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘ঘটনার সময় চেকপোস্টে দায়িত্বপালন করা এপিবিএন এর তিন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে হত্যাকাণ্ডে তারা সম্পৃক্ত। সব পর্যালোচনা করে তাদের গ্রেফতারের পর রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।’
এর আগে এ হত্যা মামলায়, সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, উপ-পরিদর্শক (এসআই) লিটন, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সিনহা হত্যা মামলায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়ার নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও মোহাম্মদ আইয়াছসহ দশজন গ্রেফতার রয়েছে। এদের সবাইকে ৭দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
গত ৩ জুলাই শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও তাসকিনকে নিয়ে সিনহা কক্সবাজার যান ভ্রমণবিষয়ক ভিডিওচিত্র ধারণ করতে। গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিষবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা।
এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। একটি মামলায় হয় টেকনাফ থানায়। এই মামলায় সরকারি কাজে বাধা ও গুলিতে নিহত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। সেই মামলার আসামি করা হয় সিফাতকে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় আসামি করা হয় শিপ্রা দেবনাথকে।
৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন বাদী হয়ে একই আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।