খবর৭১ঃ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এখন একটি রাজনৈতিক সংখ্যায় পরিণত হয়েছে’ বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এমন মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সংস্থাটি সরকারি তথ্য-উপাত্ত কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে বলে দাবি করেন তিনি। সিপিডি যত নেগেটিভ বলতে পারবে ততই তাদের লাভ বলে মনে করেন মন্ত্রী।
সোমবার আয়কর বিভাগের রাজস্ব আদায় অগ্রগতি পর্যালোচনা ও কর্মপরিকল্পনাসংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনলাইনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে অর্জিত ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপির সাময়িক প্রবৃদ্ধির হার রাজনৈতিক এবং একে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে বলে গতকাল সিপিডির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। এ বিষয়ে অনলাইন ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান।
অর্থমন্ত্রী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমাদের খাল-বিল, নদী-নালা, শিল্প কারখানা, ব্যবসা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান এবং গ্রামীণ অর্থনৈতিক অবস্থা সবকিছু দেখলেই বোঝা যাবে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় আছে।’
জিডিপির হিসাব এসবের ওপর ভিত্তি করে বের করতে হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘হয় অনুমান না হয় তথ্য-উপাত্ত এই দুটোর ওপর ভিত্তি করে করতে হবে। বিবিএস তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তি করে কথা বলে। সিপিডি যদি আন্দাজের ওপর ভিত্তি করে কথা বলে তাহলে এটা কতটা গ্রহণযোগ্য আপনারাই বলেন।’
বিবিএসের তথ্য সিপিডি ব্যবহার করে এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১০ বছর দেখেছি তারা আমাদের এটাকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে। আমরা বাজেট দিলেই তাদের অনুষ্ঠান দেয়ার সময় এসে যায়। সারা বছর কয়টা অনুষ্ঠান করে। কাঁচামাল এখান থেকে নিয়ে বিদেশে এক্সপোর্ট করে, এই হলো তাদের ব্যবসা। সহজ ব্যবসা। তবুও আমি তাদের (সিপিডি) কিছু বলবো না। তারা আছে বলেই আমরা বেশি অনুপ্রাণিত হই, শক্তিশালী হওয়ার জন্য প্রত্যয়ী হই এবং আমরা প্রমাণ করার জন্য চেষ্টা করি।’
সরকার তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করে ঘোষণা দিচ্ছে। সিপিডির মতো এত বড় একটা সংস্থা আন্দাজের ওপর কথা বলবে কথাটা কি যর্থার্থ এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যথার্থ, আমি যা বলছি যথার্থ। তাদেকে বলেন কত হবে আমাদের। তাদের এক বছররের জিডিপি বের করে দিতে বলেন এবং তারা আমাদের পরিসংখ্যান অফিসে যেতে পারবে না। তারা নিজেরা পরিসংখ্যান দিক।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা যদি আট দশমিক দুই ভাগ দাবি করতার তারা এই প্রশ্ন করতে পারত। কিন্তু পাঁচ দশমিক দুই ভাগ দাবি করেছি। প্রথম সাত মাসেই তো এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক প্রজেকশন করেছিল আমাদের ৭ দশমিক আট ভাগ প্রজেকশন হচ্ছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সিপিডি সিপিডির কাজ করবে। আমরা আমাদের মতো কাজ করবো। আমরা কাজ করছি সেটা বিশ্বাস করবেন না করবেন সেটা আপনাদের ব্যাপার। আমাদের কাজ করার যে ধরন, যে নিয়ম সে অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের হিসাব যে সঠিক সেটা সারা বিশ্ব স্বীকার করে, সিপিডি না করুক। কারণ সিপিডি যত বেশি নেগেটিভ বলতে পারবে সেটা তাদের লাভ। যদিও তাতে দেশের কিংবা দেশের মানুষের কোনো লাভ নেই।’