খবর৭১ঃ ভয়াবহ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরণে লেবাননের রাজধানী বৈরুত এখন ধ্বংসস্তূপ। ঝুঁকির মুখে দেশবাসীর জীবন ও জীবিকা। ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছে জনগণ। এমন পরিস্থিতিতে আশার আলো হয়ে সামনে এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ও হতাশ লেবানিজদের জন্য ‘নতুন বৈরুত’ হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে উন্নত এই দেশটির রাজধানী শহর দুবাই। পরিবার-পরিজনের মুখে খাবার তুলে দিতে দেশ ছেড়ে দুবাই পাড়ি জমাচ্ছে হাজার হাজার লেবানিজ। গালফ নিউজ।
সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি আর অদক্ষতার কারণে গত সপ্তাহে (৪ আগস্ট) বৈরুতের বন্দরনগরীতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনা দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকার ওপর প্রভাব ফেলেছে। বিস্ফোরণে ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু জীবনযাপন করছে প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ। এখন একটু নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য ছুটে বেড়াচ্ছে বহু লেবানিজ। আর এর সব সুবিধা নিয়ে হাতছানি দিয়ে ডাকছে দুবাই।
আলি হাম্মদ, বয়স ৩০। পেশায় একজন আইটি ইঞ্জিনিয়ার। বৈরুত বিস্ফোরণে তার সব স্বপ্নই ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। কোনোরূপ উন্নতির আশা না দেখে শেষ পর্যন্ত দুবাই পাড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যে বৈরুতে জন্ম আর বেড়ে ওঠা, অবশেষে প্রাণের সেই শহর ছাড়তে হল তাকে।
মঙ্গলবার দুবাই পৌঁছানোর পর এএফপিকে এক সাক্ষাৎকারে হাম্মদ বলেন, ‘এটা আদৌ কোনো সহজ ব্যাপার নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাকে দেশ ছাড়তেই হল। আমার মনে হচ্ছে, যে শহরকে আমি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ভালোবাসব, আমি সেই শহরের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। কিন্তু সেখানে হতাশা ছাড়া আমার জন্য আর কিছুই তো অবশিষ্ট নেই।’
লেখাপড়া শেষ করার পর গত ৪ আগস্টের বিস্ফোরণের আগ পর্যন্ত প্রায় এক বছর ধরে একটি চাকরির আশায় বৈরুতের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন হাম্মদ। তিনি বলেন, ‘এখন দুবাইতে যে কোনো একটা কাজে ঢুকতে পারব। একটু শান্তিতে থাকতে পারব। আর দেশে পরিবারকেও কিছু টাকা-পয়সা পাঠাতে পারব।’ হাম্মদের মতো লেবাননের অনেক তরুণই কাজের সন্ধানে দুবাই যাচ্ছে।