খবর৭১ঃ মহামারি করোনাভাইরাসের টিকা তৈরিতে নিরলস কাজ করছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ও সংস্থা। তবে এখনো কোনো টিকা বাজারে আসেনি। এমন অবস্থায় এবার রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের টিকা প্রস্তুত এবং ১২ আগস্টের পরই সেটি বাজারে আসবে। রাশিয়া তাদের টিকার সফলতা আগেই জানিয়েছিল, তবে তাদের টিকা স্বীকৃতি দিতে অপারগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। খবর ব্লুমবার্গের।
রাশিয়ায় মূলত দু’টি টিকার ট্রায়াল চলছে। একটি বানিয়েছে রুশ সরকার পরিচালিত ভেক্টর স্টেট রিসার্চ সেন্টার অফ ভাইরোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি। দ্বিতীয়টি বানাচ্ছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গ্যামেলিয়া সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি।
এখন বলা হচ্ছে গ্যামেলিয়ার বানানো ‘গাম-কোভিড-ভ্যাক লিও’ নামে টিকা প্রস্তুত। টিকার রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু হবে ১০ বা ১২ আগস্ট। রেজিস্ট্রেশনের তিন থেকে সাত দিনের মধ্যেই বাজারে এসে যাবে টিকা।
রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাসখোও দাবি করেছেন, ‘গ্যামেলিয়ার তৈরি টিকার ট্রায়াল পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে।’
রুশ সংবাদসংস্থা তাস জানিয়েছে, রাশিয়ার ডায়রেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ)-এর প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ জানিয়েছেন, যাদের উপরে ‘গাম-কোভিড-ভ্যাক লিও’ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের শরীরে প্রথম ডোজ দেওয়ার ২১ দিনের মাথায় প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। আর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পরে করোনাভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়েছে।
দিমিত্রিয়েভ বলেন, ‘প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা একশো শতাংশ সফল হয়েছে। প্রথম ডোজেই ২১ দিনের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। আর দ্বিতীয় ডোজের পরে সেটা দ্বিগুণ হয়েছে। পশুদের শরীরে প্রয়োগ করেও একশো শতাংশ সাফল্য মিলেছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রাশিয়ার তৈরি এই টিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এটাকে করোনা মোকাবিলার অস্ত্র হিসেবে মানতে নারাজ এই সংস্থা। সংস্থার মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমেইয়ার বলেছেন, ‘টিকার পরীক্ষার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। কোনো টিকা বাজারে ছাড়ার আগে অনেক রকমের পরীক্ষা করে দেখতে হয়। অনেক গবেষকই টিকা তৈরিতে সাফল্যের কথা বলছেন। সেটা অবশ্যই ভাল। কিন্তু টিকা তৈরি করা আর সবরকম পরীক্ষার পরে তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। এই বিষয়ে তাড়াহুড়ো করা মোটেই উচিত নয়।’
তবে রাশিয়া সরকার করোনা টিকা নিয়ে বেশ উৎসাহি। তারা জানিয়েছে, টিকার চূড়ান্ত অনুমোদন মিলে গেলেই সবার আগে ফ্রন্টলাইনে থাকা চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ করোনা যোদ্ধাদের উপরে প্রয়োগ করা হবে। পুতিন সরকারের অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারকে ‘স্পুটনিক মোমেন্ট’ বলে সম্প্রতি দাবি করেছেন।