খবর৭১ঃ জেকেজি হেলথ কেয়ারের করোনা পরীক্ষার অনুমোদন পাওয়ার প্রক্রিয়া জানতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সদ্য পদত্যাগপত্র জমা দেয়া মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এবং সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা ৪টার দিকে ডিবির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) গোলাম মোস্তফা রাসেলের নেতৃত্বে একটি টিম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যায়। সেখানে অধিদপ্তরের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জেকেজি হেলথ কেয়ারের করোনা পরীক্ষার অনুমোদন পাওয়ার প্রক্রিয়ায় এরই মধ্যে কিছু অনিয়মের তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। পাশাপাশি জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল চৌধুরী, তার স্ত্রী ড. সাবরিনা আরিফসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকেও কিছু তথ্য এসেছে। এসব ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেন, জেকেজি হেলথ কেয়ারকে অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে কিছু কাগজপত্র চাওয়া হয়েছিল। পরে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাদের ডাকা হলে ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্ট টিম সেখানে যায়। প্রয়োজনী তথ্য সংগ্রহের পর অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জেকেজির বিষয়ে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটির ল্যাপটপে তৈরি করা হয়। জব্দ করা ল্যাপটপে এর প্রমাণ মিলেছে। আরিফ চৌধুরী জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানান, জেকেজির সাত-আট কর্মী ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেন।
জানা গেছে, নমুনা সংগ্রহের জন্য জেকেজির হটলাইন নম্বরে ফোন করলে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতেন। আবার অনেকে জেকেজির বুথে এসে নমুনা দিতেন। বিদেশি নাগরিকদের জন্য নেয়া হতো ১০০ ডলার (প্রায় আট হাজার ৫০০ টাকা)। বাংলাদেশিদের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা। যদিও দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতির ভিত্তিতে বিনামূল্যে তাদের স্যাম্পল কালেকশন করার কথা ছিল। এসব ঘটনার পর ২৪ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের নমুনা সংগ্রহের যে অনুমোদন ছিল তা বাতিল করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।