খবর৭১ঃ অসাম্প্রদায়িক মননের স্মারক সম্প্রীতি বাংলাদেশ পার করল দু‘বছর। মুক্তচিন্তায় শানিত বৈচিত্র্যময় প্রাণের প্রতিধ্বনি সংগঠনটি এরই মধ্যে আশা জাগিয়েছে জনতায়–জনারণ্যে। জাতির জনকের ত্যাগ, আদর্শ আর প্রত্যয়দীপ্ত সংগঠকদের চেতনায় অবিরাম–উন্নয়ন, উদ্ভাসন আর প্রজ্জ্বলিত শিখা ছড়িয়ে দিতেই যাত্রা শুরু আদর্শিক সম্প্রীতির।
গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, শহর থেকে জনতায়–জনজীবনে পথ না হারানোর মন্ত্র পৌঁছে দিতেই প্রীতিময় সংগঠকেরা যুক্ত আছেন দুর্বার। প্রিয় স্বদেশের জন্য বুকে বাজে মন্ত্র অনিবার, স্লোগান আর শপথ তাই– ‘পথ হারাবে না বাংলাদেশ।’
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে গত দু’বছর ক্লান্তিহীন পথচলায় নানা কর্মসূচি পালন করেছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সারা দেশে ঘুরে ঘুরে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে ‘পথ হারাবে না বাংলাদেশ‘ শীর্ষক কর্মসূচি নিয়ে দেশের জেলা উপজেলায় গেছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হয়েছে সভা–সমাবেশ, সেমিনার–সিম্পোজিয়াম। আঞ্চলিক ও লোক সংগীতের আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
৭ জুলাই দুই বছরের পথ চলা শেষে তৃতীয় বর্ষে পা রাখছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই জাতীয় জাদুঘরের শওকত ওসমান মিলনায়নে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে এই সামাজিক সংগঠনটি। ২০১৯ সালের শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সামনে রেখে ‘শতবর্ষের পথে বঙ্গবন্ধু ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ‘ শীর্ষক কর্মসূচি নিয়ে আবারও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেমিনার–সিম্পোজিয়াম ও মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সম্প্রীতি বাংলাদেশ।
কভিডকালে প্রকাশ্য অনুষ্ঠান বন্ধ থাকলেও থেমে নেই সম্প্রীতি বাংলাদেশের আয়োজন। প্রতি শনিবার রাত ৯টায় ফেসবুক লাইভে সম্প্রচার হচ্ছে সম্প্রীতি সংলাপ। এ পর্যন্ত সম্প্রীতি সংলাপের ১৪টি পর্ব অনলাইনে লাইভ সম্প্রচার হয়েছে। ৭ জুলাই মঙ্গলবার রাত ৯টায় সম্প্রীতি সংলাপের বিষয় ‘তৃতীয় বর্ষে পা : পথচলার গল্প‘।
সংগঠনের আহ্বায়ক বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ও সংস্কৃতিযোদ্ধা একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সম্প্রীতি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরের মানুষের যুথবদ্ধজীবনের ভৌত রসায়ন। আমাদের স্বপ্ন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শানিত বাংলাকে প্রাণিত করা। গণমূখি সংস্কৃতিকে ঋদ্ধ করে তাতে লাল সবুজের পূর্ণ আলপনা আঁকতেই সংগঠকেরা অবিরাম কাজ করে চলেছেন।
সংগঠনের সদস্য সচিব বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের অভিমত, দু’বছরের পথ চলায় সম্প্রীতি বাংলাদেশ অজস্র শুভানুধ্যায়ীর ভালোবাসা পেয়েছে। সামনের দিনগুলো আমাদের দ্যুতি ছড়ানোর সময়। কঠিন সময় পার করছে বিশ্ব। সামগ্রিক উন্নয়নকে সামনে রেখে তাই আমরাও সাংগাঠনিক পরিকল্পনার বিন্যাস ঘটিয়েছি।
সংগঠনের পক্ষ থেকে তৃতীয় বর্ষে পদার্পনের শুভক্ষণে সবাইকে অন্তহীন ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন পীযুষ বন্দোপাধ্যায় ও ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। তাঁরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন সকল মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের প্রতি।
দেশের গণমাধ্যম সম্প্রীতি বাংলাদেশ–এর সব কার্যক্রম ও কর্মসূচির খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ ও প্রচার করে দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। মিডিয়ার সহযোগিতা সম্প্রীতি বাংলাদেশকে মানুষের কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে বলেই মনে করেন তাঁরা। একইসঙ্গে আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য সম্প্রীতি বাংলাদেশের সকল অনুষ্ঠানের সঙ্গে সাধারণের যুক্ত থাকারও আহ্বান জানান আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব।