মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর প্রতিনিধিঃ শারীরিক প্রতিবন্ধী ফকির (১৫) স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারে না। দুই পা একটু সামনে বাড়াতেই আবার বসে যেতে হয় তাকে। ঠিকভাবে কথাও বলতে পারে না। এমনই এক প্রতিবন্ধী কিশোরের খোঁজ পেয়ে তাঁর জন্য একটি নতুন হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করেছেন সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসন। ওই প্রতিবন্ধীকে ডেকে হুইল চেয়ার তুলে দিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ। উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিমানবন্দর পশ্চিমপাড়ার রং মিস্ত্রি আমিনুল ইসলাম ও গৃহিনী ওয়াজিফা বেগমের পুত্র ফকির (১৫)। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট সে। জন্মগতভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী।
হাঁটাচলা করতে পারে না ঠিকভাবে। কথাও বলতে পারে না। ফলে মাটিতে শুয়ে বসে দিন কাটে তার। ফকিরের বিষয়টি জানতে পারে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সৈয়দপুর ইউনাইটেড ভলান্টিয়ার এসোসিয়েশনের (সুভা) সভাপতি নওশাদ আনসারী। তাঁর মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে ওই প্রতিবন্ধীর জন্য একটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ। গত বুধবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রতিবন্ধী ফকিরকে দেয়া হয় একটি নতুন হুইলচেয়ার। এ সময় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হাওয়া খাতুন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সৈয়দপুর ইউনাইটেড ভলান্টিয়ার এসোসিয়েশনের (সুভা) সভাপতি নওশাদ আনসারী ও প্রতিবন্ধী মো.ফকিরে মা ওয়াজিফা বেগম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন । ছেলের জন্য হুইলচেয়ার পেয়ে ইউএনও মো. নাসিম আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ফকিরের মা ওয়াজিফা বেগম বলেন, এতোদিন একটি হুইল চেয়ারের জন্য আমার ছেলে খুবই কস্টে ছিল। অভাবী সংসারে টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় আমরা একটি হুইলচেয়ার কিনে দিতে পারিনি প্রতিবন্ধী ছেলেকে। আজ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে একটি হুইলচেয়ার দিয়ে আমার প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য অনেক উপকার করা হলো। এখন থেকে আমার ছেলে হুইলচেয়ারে বসে সবখানে চলাফেরা করতে পাবরে। তাদের উপকারের কথা আমি কোন দিন ভূলতে পারবো না। আল্লাহ দরবারে তাদের জন্য প্রাণখুলে দোয়া করি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হাওয়া খাতুন বলেন, এ রকম একজন শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সেবায় আমরা সব সময় আছি। সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারের মাধ্যমে যখনই শুনলাম একজন প্রতিবন্ধী হুইলচেয়ারের অভাবে কষ্ট করছে, তখনই ওই প্রতিবন্ধীর জন্য একটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়। সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ বলেন, এতোদিন প্রতিবন্ধী ফকির একটি হুইলচেয়ারের জন্য অনেক কষ্ট করেছে। প্রতিবন্ধী ফকিরের হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করে আমাকে অনেক ভাল লাগছে। তিনি বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসন সব সময় সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দাঁড়ানো চেষ্টা করি।