খবর৭১ঃ
মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাফিক বিভাগের এক কর্মকর্তার হাতে ধরা পড়লেন এক ছিনতাইকারী। আজ সোমবার দুপুরে ধাওয়া করে শেখ মাহমুদ ওরফে মামুন ( ৫০) নামের ওই ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন ট্রাফিক পুলিশের শহর ও যানবাহন উপ–পরিদর্শক (সার্জেন্ট) মো. আশরাফ কোরাইশী।
এসময় ট্রাফিক সার্জেন্ট ও অপর ট্রাফিক পুলিশ সদস্য এক ব্যবসায়ীর ছিনতাই হওয়া তিন লাখ টাকা ছিনতাইকারী চক্রের আটক ওই সদস্যের কাছ থেকে উদ্ধার করেছেন। আজ দুুপুর সোয়া ১২টায় শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে গাউসিয়া কনফেকশনারীর সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে আটক ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য মাহমুূদ ওরফে মামুনকে (৪৫) ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। জানা গেছে, সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর বালাপাড়ার তোফায়েল হোসেনের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৪২) বর্তমানে লক্ষণপুর বাজারে মুদি ব্যবসায় জড়িত। তিনি ঘটনার দিন আজ সোমবার দুপুরে টাকা উত্তোলনের জন্য সোনালী ব্যাংক সৈয়দপুর ক্যান্ট শাখায় আসেন। এরপর ওই ব্যাংকের নিজ হিসাব নম্বর থেকে তিন লাখ টাকা উত্তোলন করে তিনি একটি কাপড়ে ব্যাগে রাখেন। পরে তিনি ওইসব টাকা নিয়ে দোকানের মালামাল কেনার জন্য মোটরসাইকেল যোগে শহরে আসেন। দুুপুর আনুমানিক সোয়া ১২ টার দিকে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের গাউসিয়া কনফেকশনীর সামনে পৌঁছামাত্র সেখানে সামান্য যানজটের আটকা পড়েন মুদি ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান।
এ সময় ছিনতাইকারী চক্রের এক সদস্য পরণের লুঙ্গি দিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের মোটরসাইকেলে পেছন থেকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় মোস্তাফিজুর রহমান মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গেলে ছিনতাইকারী চক্রের এক সদস্য কৌশলে মোটর সাইকেলের হ্যান্ডেলে থাকা দ্রুত টাকার ব্যাগটি কেটে দেয়। এ সময় ব্যাগ থেকে টাকা পড়ে গেলে ছিনতাইকারী চক্রের অপর এক সদস্য তা নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করে। এ সময় সেখানে কর্তব্যরত সৈয়দপুর ট্রাফিক বিভাগের শহর ও যানবাহন উপ– পরিদর্শক (ট্রাফিক সার্জেন্ট) মো. আশরাফ কোরাইশী এবং তাঁর সঙ্গীয় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য মো. নাইমের ঘটনাটি নজরে পড়ে। সাথে সাথে তারা ধাওয়া করে শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়ক (মদিনা মোড়) থেকে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য শেখ মো.মাহমুদ ওরফে মামুনকে (৪৫) টাকাসহ হাতেনাতে ধরে ফেলেন।আটক ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য মাহমুদ ওরফে মামুন পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর বাড়ি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঠিকানা বলে। পরে জানা যায় তাঁর বাড়ি নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপেজলার নিতাই ইউনিয়নের পানিয়ানপুকুর গ্রামে। সে ওই এলাকার মহির উদ্দিনের পুত্র। পরে আটক আটক ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য মামুনকে (৪৫) ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করে পুলিশ।
আদালতে ওই ছিনতাইকারী টাকা ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করলে আদালতের বিচারক তাঁকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। ভ্রাম্যমান আদালতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রমিজ আলম ওই দন্ডাদেশ দেন। সৈয়দপুর ট্রাফিক বিভাগের শহর ও যানবাহন পরিদর্শক (টিআই) জ্যোতির্ময় রায় তাঁর বিভাগের দুই সদস্য কর্তৃক ছিনতাইকারীর কবল থেকে এক ব্যবসায়ীর ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ট্রাফিক পুলিশের দুই সদস্যের তৎপরতায় ব্যবসায়ীর তিন লাখ টাকা খোয়া যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে।
এদিকে ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট আশরাফ কোরাইশী ও অপর সদস্য নাইমের কর্মকান্ড সৈয়দপুরে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। এবিষয়ে অনেকেই মন্তব্য করেন, তারা যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অপরাধিদেরও ধরতে কাজ করেন। যা সত্যিই প্রশংসনীয়।