খবর৭১ঃ
মিজানুর রহমান মিলন , সৈয়দপুর প্রতিনিধিঃ করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কোন নিয়ম না মেনে প্যান্ডেল সাজিয়ে চলছিল খাওয়া দাওয়া। বর ও কনে পক্ষের লোকজন ছিল বিয়ে আয়োজনে ব্যস্ত। একদিকে চলছিল নববধুকে সাজানোর ব্যস্ততা অন্যদিকে বর পক্ষের লোকজনও বিয়ে সম্পন্ন করতে ছিল তৎপর। সবই চলছিল বাল্যবিয়ের আয়োজনকে ঘিরে।
ঠিক এমন সময় হাজির বাল্য বিয়ের সংবাদে হাজির হয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিল বেরসিক উপজেলা ও থানা প্রশাসন। আর বাল্য বিয়ের আয়োজন করার দায়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হল বরের বাবার। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রমিজ আলম ওই অর্থদন্ড করেন।গতকাল শুক্রবার বিকেলে সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়া এলাকার শহীদ জহুরুল হক সড়কের পাশে অবস্থিত উর্দূভাষীদের ক্যাম্প দূর্গামিলে ওই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর পৌর এলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাবুপাড়া দূর্গামিল এলাকার মো. হাবিব ও পারভীন বেগম দম্পতির ছেলে মো.তাহির হোসেন। ছেলে পেশায় একজন গ্লাস মিস্ত্রি।
জন্ম নিবন্ধন কার্ডে তাঁর জন্ম তারিখ উল্লেখ রয়েছে ২০০০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি। সে হিসেবে তাঁর বয়স ২০ বছর ৪ মাস ১২ দিন। জন্মসনদ অনুযায়ী বিয়ের বয়স না হলেও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে তাহিরের বিয়ে ঠিক করা হয়। কনে একই ক্যাম্পের মো. আফাক ও আনোয়ারী বেগমের দম্পতির মেয়ে পুতুল আখতার। পুতুল আখতারের বয়স ১৫ বছর ৯ মাস নয় দিন। গতকাল শুক্রবার ছিল তাদের ওই বাল্য বিয়ের দিনক্ষণ। এজন্য বিয়ের সব আয়োজন শেষে শহরের দূর্গামিল ক্যাম্পের অফিস রুমে অতিথি আপ্যায়ন চলছিল। বর পক্ষও যথাসময়ে কনের বাড়িতে হাজির হয়। কিছুক্ষণ পরেউ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
ঠিক এমন সময় খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রমিজ আলম। তিনি সেখানে বাল্য বিয়ের আয়োজনের সবকিছুই দেখতে পান। এ সময় ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে বাল্য বিয়ে আয়োজনের দায়ে বরের বাবা মো. হাবিবের ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়। ওই অর্থদন্ডের রায় দেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রমিজ আলম। এ সময় সৈয়দপুর উপজেলা মহিলা বিষয় কর্মকর্তা মোছা. নূরন্নাহার শাহজাদী, সৈয়দপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এরশাদ হোসেন পাপ্পু ও সৈয়দপুর থানা উপ-পরিদর্শক ইন্দ্র মোহন রায়সহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে কথা হলে সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি)রমিজ আলম বলেন,বাল্য বিয়ে দন্ডনীয় অপরাধ। তিনি বাল্যবিয়ের বিষয়ে সকলকে সচেতন হওয়াসহ অন্যদের সচেতন করার আহবান জানান। সেই সঙ্গে বাল্য বিয়ে মুক্ত সৈয়দপুর গড়তে সকলের সহায়তা কামনা করেন।