খবর৭১ঃ
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাজিউল হক।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুনেছি তাকে বিদেশে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু, এই অবস্থায় তাকে বিদেশে নেয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ হবে। মোহাম্মদ নাসিমের বর্তমান শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত দুই থেকে তিন দিন মোহাম্মদ নাসিমের ব্লাড প্রেশার স্বাভাবিক ছিল। তবে, আজকে (বৃহস্পতিবার) উঠানামা করছে। তার রক্তের একটা পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, রক্ত জমাট বাঁধতে অসুবিধা হচ্ছে। এখনও তিনি নিজে থেকে শ্বাস নিতে পারছেন না। সব মিলিয়ে অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে’।
ডা. রাজিউল হক বলেন, তার শারীরিক অবস্থার আরও কিছুটা অবনতি হয়েছে। গত দুই দিন তার ব্লাড পেশার স্বাভাবিক থাকলেও বৃহস্পতিবার তা উঠানামা করেছে। তিনি আগের মতোই অচেতন অবস্থায় আছেন এবং তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ভেন্টিলেশন সাপোর্টেই রেখা হয়েছে। চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা সার্বক্ষণিক তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়য়ের পক্ষ থেকে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি।
মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বৃহস্পতিবার বিকালে বলেন, আমি দুপুরে গিয়ে দেখলাম তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে আরও খারাপ। আরও কিছুটা অবনতি হয়েছে। তবে তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে। টাইম টু টাইম শারীরিক অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এভাবেই চিকিৎসা চলবে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তার ছেলে (তানভীর শাকিল জয়) আমাকে জানিয়েছে- তারা যোগাযোগ করছেন কিন্তু এখনও পর্যন্ত ফাইনাল রেজাল্ট পায়নি।
এর আগে উন্নত চিকিৎসার জন্য মোহাম্মদ নাসিমকে সিঙ্গাপুর নেয়া প্রসঙ্গে তানভীর শাকিল জয় জানিয়েছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিঙ্গাপুরের সঙ্গে একটা যোগাযোগ করে। কিন্তু এটার এখনও কোনও ফলাফল আসেনি। দেশের চিকিৎসায় সন্তেুাষ প্রকাশ করে জয় আরও জানিয়েছিলেন বলেন, চিকিৎকরা যদি ছাড়পত্র দেন, আর তারা যদি মনে করেন নেওয়া (দেশের বাইরে) যাবে, তাহলে আমরা সেটা চিন্তা করবো। তার আগে সেই চিন্তা করছি না।
গত ১ জুন জ্বর-কাশিসহ করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। সেখানেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রাতে ওই পরীক্ষার ফল পজেটিভ আসে। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় মোহাম্মদ নাসিমের ব্রেন স্ট্রোক হয়। হাসপাতালের নিউরোসার্জন অধ্যাপক রাজিউল হকের নেতৃত্বে কয়েক ঘণ্টায় তার অস্ত্রোপচার সফল হয়। সফল অস্ত্রোপচার হলেও এখনো তার মাথার ভেতরে বেশ কিছু রক্ত জমাট বেধে আছে। স্ট্রোকের পর থেকেই তিনি অচেতন অবস্থায় ভেন্টিলেশন সাপোর্টেই আছেন। এরই মধ্যে পরপর দুইবার করোনা পরীক্ষায় তার নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।