খবর৭১ঃ
মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ টানা বর্ষণ ও পহাড়ি ঢলে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ত্রিপুরা পল্লীতে পাহাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতেমধ্যে চারটি পরিবারের বাড়ি-ঘরের ভীটে ভেঙে পড়ায় রাস্তায় বসার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু মাথা গুজার ঠাই না থাকায় মৃত্যু ঝুঁকি মাথায় নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন তিনটি পরিবার।জানা যায়- পল্লীতে ২৪টি পরিবারের বসবাস।
কয়েক বছর ধরে তাদের বসবাস করা টিলাতে পাহড়ি ঢলে ভাঙন দেখা দেয়। দুই বছর আগে ইতোমধ্যে সেখান থেকে তিনটি পরিবার অন্যত্র চলে গেছেন। এ বছরও টিলায় ধস দেখা দেয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন ত্রিপুরা পল্লির বাসিন্দারা। ভাঙনকবলিত এলাকার তিনটি পরিবার সেখান থেকে চলেও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যদিও তাদের পাশে দাড়ানোর আস্বাস দিয়েছেন চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন।স্থানীয়দের অভিযোগ- গত কয়েকদিন ধরে চুনারুঘাটসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে নতুন করে ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়ছে। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা সেখানে গাইডওয়াল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর দেখতেও যান না তারা।এদিকে, শুধু ত্রিপুরা পল্লির কয়কটি পরিবারই নয়। হুমকির মুখ রয়েছে সেখানে বসবাস করা ২৪টি পরিবারই।
এমনকি তাদের পল্লিতে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটিও ভেঙে যেতে পারে এ বছরই। যদি রাস্তাটি ভেঙে যায়, তাহলে পাহাড়ের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে বন্ধি হয়ে পড়বেন পরিবারগুলো।সনকা তন্তবায় বলেন- অনেক কষ্ট করে সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে একটি ঘর বানিয়েছিলাম। কিন্তু এখন সেই ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। রাতে ভয়ে ঘুমাতে পাড়ি না। কখন যেন ভেঙে পরে। এ ব্যাপারে ত্রিপুরা পল্লীর হেডম্যান চিত্ত দেববর্মা বলেন- ‘ত্রিপুড়া পল্লিতে অনেক মানুষের বসবাস ছিল। বিভিন্ন কারণে এখান থেকে মানুষজন চলে গেছে। বর্তমানে আমরা ২৪টি পরিবার এখানে বসবাস করছি। কিন্তু টিলা ভেঙে পড়ায় ইতোমধ্যে এখন থেকে তিনটি পরিবার চলে গেছে। এ বছর নতুন করে আরও তিনটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছাড়ার উপক্রম।
তিনি বলেন- ‘আমাদের এখানে গাউডওয়াল নির্মাণসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আমাদের সবাইকে পথে বসতে হবে। নির্বাচনের সময় সবাই আমাদের আস্বাস দেন। কিন্তু পরে আর কোন খবরও নেন না তারা।সাতছড়ি জাতীয় উদ্যোনের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোতালিব হোসেন বলেন- ‘শুধু ত্রিপুড়া পল্লি নয়, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়ছে। উদ্যানের ভেতরে যাওয়ার জন্য যে ব্রীজটি রয়েছে সেটিও ভেঙে পড়ার উপক্রম। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ারও অনেকটা ঝুঁকিতে রয়েছে।’ তিনি বলেন- ‘এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়াজন।’
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সত্যজিৎ রায় দাশ বলেন- ‘ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা তিনটি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া স্থানী সমাধানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলাচ আলোচনা চলছে।’