খবর৭১ঃ
রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৫ করোনা রোগী মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে হাসপাতালের চেয়ারম্যান, এমডি, প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, দায়িত্বরত ডাক্তার নার্স, ও সেফটি সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৫ রোগীর মধ্যে এ্যান্থনী পলের মেয়ের স্বামী রোনাল্ড নিকি গোমেজ বাদী হয়ে মামলাটি বুধবার রাতে দায়ের করেছেন। মামলায় ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে অবহেলা জনিত কারণে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে।
গত ২৭ মে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডে রিয়াজুল আলম (৪৫), খাদেজা বেগম (৭০), এ্যান্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) ও মো: মাহাবুব এলাহী চৌধুরী হিরো (৫৭) নিহত হন। অগ্নিকাণ্ডের পর হাসপাতালের কেউই রোগীদেও বাঁচাতে এগিয়ে যায়নি। হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রগুলোও ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। কোনো ধরনের নিয়ম না মেনেই আইসোলেশন সেন্টারটি নির্মান করা হয়েছিল। এ কারণে ঘটনার পর থেকেই এ ব্যাপারে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ওঠে।
বুধবার রাতে গুলশান থানার ওসি কামরুজ্জামান জানান, নিহত এ্যান্থনী পলের মেয়ের স্বামী রোনাল্ড নিকি গোমেজ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৩০৪(ক) ও ১০৯ ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে।
গুলশান থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা এস আই তোফাজ্জল হোসেন জানান, বুধবার রাত ৯টার দিকে সিইও, এমডি, চিকিৎসক ও নার্সসহ ৬ পদের নাম উল্লেখ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলার বাদী রোনাল্ড রিকি গোমেজ বলেন, ঘটনার দিন তিনি চাক্ষুস দেখেছেন ইউনাইটেডের কর্মকর্তাদের অবহেলা। দুইবার করোনা টেস্ট নেগেটিভ আসার পরও তার স্বজনকে ইচ্ছাকতভাবে রাখা হয় আইসোলেশন ইউনিটে। চিকিৎসক ও প্রশাসকদেও স্বেচ্ছাচারিতায় আরো কয়জন নন-কোভিড রোগীকে সেখানে রাখা ছিল। অথচ তাদের করোনা নেগেটিভ ছিল। তাই এই ঘটনা ও ৫জন নিহতের পেছনে সম্পূর্ন দায় ইউনাইটেড হাসপাতালের। এই কয়েকদিন পরিবারের সবাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকার কারন মামলা করতে কয়েকদিন দেরি হয়েছে বলে জানান রোনাল্ড।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, ঘটনার পর তারা লাশ চট্টগ্রামে নিতে হবে দেখে দেড় দিন ইউনাইটেডের মর্গ ব্যবহার করেন। এজন্য ন্যুনতম মানবিকতা না দেখিয়ে ইউনাইটেডের কর্মকর্তারা তাদের কাছে বিল দাবি করেন। এমনকি হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসার জন্য দেড় লাখ টাকার ভাউচারও ধরিয়ে দেয়।
গুলশান থানার ওসি বলেন, মামলাটি নেয়া হয়েছে। মামলায় বাদী অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালটির চরম অব্যবস্থাপনার কারণেই তার রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিনির্বাপনে হাসপাতালের কেউ এগিয়ে আসেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে