খবর৭১ঃ যাত্রী সঙ্কটের অযুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশ বিমান বৃহস্পতিবারের সব ফ্লাইটও বাতিল করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শুধু যাত্রী সঙ্কট নয়, বর্তমানে বিমানে চলছে তীব্র উড়োজাহাজ সঙ্কটেও।
৩টি ড্যাস-৮ উড়োজাহাজের মধ্যে একটির লিজ মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। কাজেই ওই উড়োজাহাজ দিয়ে এখন আর ফ্লাইট চালাতে পারছে না বিমান। একটি উড়োজাহাজ অচল হয়ে পড়ে আছে। তাই অভ্যন্তরীণ রুট চালানোর জন্য এখন বিমানের হাতে আছে একমাত্র ড্যাস-৮ কিউ ৪০০।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এই কারণেও একের পর এক ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে বিমানকে।
সূত্র জানায়, শুধু আজকের সব ফ্লাইটই নয়, আগামী ৫ ও ৬ জুনের ফ্লাইটও বাতিল করার চিন্তা ভাবনা করছে বিমানের শীর্ষ ম্যানেজমেন্ট। এই অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ব এই বিমান সংস্থার ভবিষ্যত নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, বিমানের বর্তমান এই ক্রাইসিস অবস্থা উত্তোরণের মতো ম্যানেজমেন্টে উচ্চপর্যায়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কোনো কর্মকর্তা নেই। যারা আছেন তাদের অধিকাংশই মন্ত্রণালয় থেকে বিমানে প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্ত। তাদের কারোরই পূর্বে বিমান পরিচালনায় কোনো ধরনের অভিজ্ঞতা নেই।
জানা গেছে, যাত্রী ও উড়োজাহাজ সঙ্কটের কারণে টানা দ্বিতীয় দিনও সব ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। প্রথম দিন ৬টি ফ্লাইটের মধ্যে শুধু একটি ফ্লাইটই চালানো হয়েছিল। সেই ফ্লাইটের যাত্রীও ছিলেন মাত্র ৪ জন। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবারও বিমান আকাশে না ওড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার বলেন, যাত্রী সঙ্কটের কারণে বুধবারে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছিল। একই কারণে বৃহস্পতিবারের সব ফ্লাইটও বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে ৫ ও ৬ জুনের ফ্লাইট বাতিল করা হবে কিনা সেটি তিনি জানাতে পারেননি।
যাত্রী সঙ্কটের কারণে পরপর দুই দিন বিমান সব ফ্লাইট বাতিল করলেও অন্য এয়ারলাইন্সগুলো ফ্লাইট পরিচালনা করে যাচ্ছে। তাহলে বিমান কেন পারছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার বলেন, যাত্রী সঙ্কটের মধ্যে অন্য এয়ারলাইন্স পাচ্ছে, কারণ ওদের ভাড়া একটু কম। আর আমাদের আগের ভাড়াই আছে, বাড়াইনি।
জানা যায়, বুধবার বিমান বাংলাদেশের সৈয়দপুর রুটে দুইটি, সিলেট রুটে একটি এবং চট্টগ্রাম রুটে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করার কথা ছিল। তবে সবগুলো ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার বিমান বাংলাদেশের ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে দুইটি, সিলেটে দুইটি ও সৈয়দপুরে তিনটিসহ মোট সাতটি ফ্লাইট বাতিল হয়।
করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর গত ১ জুন দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুর রুটে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।