খবর৭১ঃ
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের ঘোষিত ৬৬ দিন সাধারণ ছুটিতে পাসপোর্টের দুই লক্ষাধিক আবেদন জমা পড়ে আছে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরে (ডিআইপি)। এসব আবেদনের মধ্যে ৩০ ভাগ আবেদন প্রবাসীদের।
অনেক পাসপোর্ট গ্রহীতা সাধারণ ছুটি ঘোষণার ২/৩ মাস আগে আবেদন করেছেন। সাধারণ ছুটি ঘোষণার আগে যারা পুনরায় পাসপোর্ট প্রদান (রিইস্যু) ও নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন, তাদের পাসপোর্ট প্রদান বন্ধ রয়েছে। শুধু প্রবাসী ও জরুরি প্রয়োজনে রিইস্যুর (পুনরায় আবেদন) আবেদনকারীদের পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।
করোনা প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত ছুটির কারণে ২৫ মার্চ থেকে বহিগর্মন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের সকল আঞ্চলিক অফিস বন্ধ হয়ে যায়। এ সময়ে অনলাইনে আবেদন করাও বন্ধ করে দেয়া হয়। যেসব পাসপোর্ট করোনা সংকটের আগেই গ্রাহকদের দেয়ার কথা ছিল অফিস বন্ধ হয়ে যাত্তয়া তা আর দেয়া হয়নি। এতে করে নতুন পাসপোর্ট ও রিইস্যু করা দুই লাখ আবেদন জমা পড়ে থাকে।
বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জানায়, বিদেশ মিশনে প্রবাসীদের আবেদন করা পাসপোর্টগুলো রিইস্যু করা হচ্ছে। সেটির কাজও চলছে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। আগে স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিদিন ২০ হাজার পাসপোর্ট বই বিতরণ করা হতো। করোনার ভাইরাসের প্রভাবে পাসপোর্ট বই ছাপানোর কাজটি কয়েকটি শিফটে ভাগ করে অল্প লোকবল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী এবং যারা স্কলারশিপে পড়াশুনা করতে যাবেন-তাদের পাসপোর্ট রিইস্যু করা হচ্ছে। আবার শান্তি মিশনে অংশ নিতে যাওয়া বা কোনও শিক্ষার্থী স্কলারশিপ পেয়েছেন-যাদের পাসপোর্ট নেই, তাদের নতুন পাসপোর্ট বিশেষ ব্যবস্থায় দেওয়া হচ্ছে।
বহিগর্মন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ বলেন, ই-পাসপোর্ট ও এমআরপি দুই ক্ষেত্রে নতুন পাসপোর্ট আবেদন বন্ধ রয়েছে। শুধু সীমিত আকারে পাসপোর্ট রিইস্যু করা হচ্ছে। কারণ নতুন পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট গ্রহীতার ছবি তোলা, ফিঙ্গার প্রিন্ট, আইরিশ পিকচারসহ বেশ কিছু কার্যক্রম রয়েছে যেগুলোতে গ্রহীতাকে সরাসরি অফিসে আসতে হবে। এই কার্যক্রম সম্পন্ন করার সময় করোনা ছড়িয়ে যাত্তয়ার আশঙ্কা থাকে। এটা সম্ভব নয় বলে নতুন পাসপোর্টের আবেদন এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, ২৫ মার্চের আগে যেসব প্রবাসীরা বাংলাদেশে এসেছিলেন, তাদের পাসপোর্ট রিইস্যু করা সম্পন্ন হয়ে গেছে। যারা জরুরি চিকিৎসার জন্য নতুন পাসপোর্ট বা রিইস্যুর আবেদন করেছিলেন- সেসব পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে। সাধারণ ছুটির মধ্যেও পাসপোর্ট ছাপানোর কাজ অব্যাহত ছিল। প্রবাসীদের রিইস্যু করা পাসপোর্ট তৈরি করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে ফ্লাইট সার্ভিসে জটিলতার কারণে পাসপোর্টগুলো পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। আর সাধারণ ছুটি ঘোষণার আগে প্রবাসীদের যেসব আবেদন ছিল সেগুলো এই দুই মাসে সব সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রবাসীদের পাসপোর্টের মেয়াদোত্তীর্ণের আগেই তার আবেদন অনুযায়ী আমরা রিইস্যু করছি।
ডিআইপি সূত্র জানায়, ৬৬ দিন পাসপোর্ট অফিস বন্ধ থাকায় প্রায় ২ লাখ আবেদনের (নতুন পাসপোর্ট ও রিইস্যু) পাসপোর্ট তৈরিতে এমন জট আগে কখনো হয়নি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই ২ লাখ পাসপোর্ট প্রদানের বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব নয় বলে ডিআইপির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ডিআইপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ বলেন, করোনার এই সংকটের মধ্যেও পাসপোর্ট প্রিন্টের কাজ চলছে। যাদের জরুরি প্রয়োজন, তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে পাসপোর্ট প্রিন্ট করা হচ্ছে।