লিবিয়া ট্র্যাজেডি : অনেক ভাবনার জন্ম দিয়েছে

0
440
লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা

খবর৭১ঃ লিবিয়াতে মানবপাচারকারীদের হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন ২৬ জন বাংলাদেশি এবং আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও ১১ জন। আগেই মৃত্যু হওয়া এক মানবপাচারকারীর পরিবারের সদস্যদের হাতে মোট ৩০ জন হত্যার শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশি ২৬ জনের বাইরে বাকি চার জন আফ্রিকার অধিবাসী।

আমি নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি এবং আহতদের সুস্থতা ও সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য প্রার্থনা করি। মূলত মানব পাচারকারীদের হাতে হতাহতের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে, বলা যায় এটি প্রাত্যহিক ঘটনা।

কিন্তু লিবিয়ার ঘটনায় একই সঙ্গে অনেক বাংলাদেশি হত্যার শিকার হওয়ায় বিষয়টি মিডিয়ার আকর্ষণ পেয়েছে বেশি।

আমাদের জাতীয় অর্থনীতি বলুন বা উন্নয়নের অনুঘটক বলুন, সমাজের জন্য অভিবাসীদের অনেক অবদান রয়েছে। গত বছর অভিবাসীরা ১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন দেশে।

এ বছরও তাদের রেমিটেন্স পাঠানো অব্যহত আছে, যদিও পরিমাণ খানিকটা কমে আসবে কোভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দায়। আমাদের শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও বিস্তৃত। সব বাজারই বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত।

এ কারণে আমরা নিজেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হব; কিন্তু কী পরিমাণ সেটা দেখার বিষয়। এরই মধ্যে অনেকে বিদেশ থেকে ফেরত এসেছেন, অনেকে আসছেন। যারা থেকে গেছেন, তারাও আছেন চাকরিহারা হয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সংস্থার তত্ত্বাবধানে।

লিবিয়ায় যে দুর্ঘটনাটি ঘটে গেছে সেটি খতিয়ে দেখলে অনেকগুলো বিষয় সামনে আসবে। প্রথমত, এই যে লোকগুলো দেশ থেকে গেলেন বৈধ বা অবৈধ উপায়ে- তাতে তাদের ইচ্ছার সাথে একটি গোষ্ঠী তাদের স্বপ্ন দেখিয়েছে উন্নত জীবনের, দিয়েছে নানা প্রলোভন।

আমি ধারণা করছি এই লোকগুলো নিয়মিত পথেই আমাদের বিমানবন্দর পার হয়ে উন্নতির স্বপ্ন নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে পা বাড়িয়েছে। দেখার বিষয় হল, এত রিস্ক নিয়ে কেন তরুণরা অনিশ্চিত ঝুঁকির পথে পা বাড়াচ্ছে, কেন এখানে তথা দেশে আমরা তাদের জন্য আশা তৈরি করতে পারছি না- এসব বিষয়ে অনেক বেশি মনোযোগ দেয়া দরকার।

কারণ কোভিড-পরবর্তী সময়ের বিশ্বব্যবস্থা, দেশে দেশে আর্থিক মন্দা ও ব্যয় সংকোচনের বিষয় মাথায় রেখে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। কীভাবে আমরা আমাদের বেকার হয়ে পড়া, বিদেশ থেকে ফেরত আসা ও আসার আশঙ্কা তৈরি হওয়া শ্রমিকদের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করব, তা ঠিক করতে হবে এখনই।

দ্বিতীয়ত, দালাল গোষ্ঠী প্রলোভন দেখিয়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে মানুষকে পাচার করে বিপদের মুখে ফেলছে। মানব পাচার কিন্তু জঘন্য একটি বিষয়। এটি রোধে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইন রয়েছে। যারা মানব পাচারে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here