খবর৭১ঃ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় রেকর্ড ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৩২জনে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬৯৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩০ হাজার ২০৫ জনে। আর সুস্থ হয়েছেন ৫৮৮ জন।
শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৯ হাজার ৯৯৩ জনের। আগের কিছু নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয় ৯ হাজার ৭২৭ জনের। এতে ১ হাজার ৬৯৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এটি একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা। এর আগে গতকাল একদিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭৭৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। তার আগের দিন (২০ মে) শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৬১৭ জনের। এ পর্যন্ত ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৪১ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩০ হাজার ২০৫ জনে।
এছাড়া এই সময়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ২৪ জন। এর আগে গত ১৮ ও ১৯ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২১ জন ও গতকাল ২২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ৪৩২ জনের।
নাসিমা বলেন, নতুন মৃতরা বয়স বিবেচনায় ২১-৩০ বছরে মধ্যে ৫ জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৮১-৯০ বছরের মধ্যে ১জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন ও বরিশাল বিভাগে ১ জন।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫৮৮ জন। এ নিয়ে মোট ৬ হাজার ১৯০ জন সুস্থ হয়েছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আইসোলেশনে এসেছেন ২২৫ জন। ছাড় পেয়েছেন ৬২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৪ হাজার ৬০ জন।
ব্রিফিংয়ে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক নাসিমা বলেন, তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করবেন। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাবেন ও ফুসফুসের ব্যায়াম করবেন। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এটি ফুসফুসের কার্যকারীতা নষ্ট করে দেয়।
চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।
এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।
ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলবে ৩০ মে পর্যন্ত।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার তথ্যানুযায়ী শুক্রবার সকাল পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৪ হাজার ৬২১ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ লাখ ৯৪ হাজার ২১০ জন। অপরদিকে ২০ লাখ ৮০ হাজার ৯৬৬ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।