খবর৭১ঃ করোনায় ধূমপায়ীর মৃত্যুঝুঁকি বেশি জানিয়ে মহামারী পরিস্থিতিতে দেশের তামাক কোম্পানিগুলোর উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন এবং তামাকপাতা কেনাবেচা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ চায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য মঙ্গলবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠান হয়েছে।
একই সঙ্গে তামাক কোম্পানিগুলোকে দেয়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতিপত্র প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. খায়রুল আলম শেখের সই করা চিঠিটি ইতিমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, গবেষণায় প্রকাশ – তামাক করোনাভাইরাস সংক্রমণে সহায়ক। অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের করোনা সংক্রমণের হার বেশি। এ ছাড়া করোনায় আক্রান্ত ধূমপায়ীর মৃত্যুঝুঁকিও অধূমপায়ীর তুলনা ১৪ গুণ বেশি বলে গবেষণায় প্রমাণিত। কেননা, ধূমপানের কারণে শ্বাসজনিত রোগ তীব্র হয় ও শ্বাসতন্ত্রে নানা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাই করোনাকালে এর ব্যবহার যতদূর সম্ভব কমিয়ে আনাসহ নিরুৎসাহিত করা উচিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী ইতিমধ্যে ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সাময়িকভাবে সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য ক্রয়-বিক্রয়, সিসা বার এবং উন্মুক্ত স্থানে পানের পিক ফেলার মতো বিষয়গুলোকে নিষিদ্ধ করেছে।
বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের বিস্তার দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ইতিমধ্যে বাজার, গণজমায়েত সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। সাধারণ ছুটিতে চলছে দেশ। দেশের এক স্থান হতে আরেক স্থানে চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আর এমন পরিস্থিতিতেও দেশের তামাক কোম্পানিগুলোকে উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন করার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতিপত্র প্রদান এ সংক্রমণে সহায়ক হয়ে উঠেছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ে থেকে পাওয়া নির্দেশনার অজুহাতে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ আইন লঙ্ঘন করে চলেছে দেশের তামাক কম্পানিগুলো।
তামাক খাত থেকে রাজস্ব আয়ের চেয়ে তামাকজনিত রোগব্যাধির চিকিৎসা ব্যয় অনেক বেশি বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এসব বিষয় উল্লেখের পর চিঠিতে বলা হয়, দেশে মহামারী সংক্রমণ ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী তামাকমুক্ত বাংলাদেশ পড়ার প্রত্যয় এগিয়ে নিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা বিশেষ প্রয়োজন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. খায়রুল আলম শেখের স্বাক্ষরিত চিঠিটি এখনও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তা পেয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি।
জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল তামাক কম্পানিগুলোকে সিগারেট উৎপাদন, তামাক ক্রয় এবং উৎপাদিত সিগারেট বিতরণ ও বিক্রির অনুমতি দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের এমন অনুমতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী।
একই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতিতে বিড়ি-সিগারেটের উৎপাদন, বিতরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করার দাবিও জানান তিনি।