শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : বন্দরনগরী বেনাপোলে রুগ্ন ও মরা গরুর মাংস বিক্রেতা সিন্ডিকেট প্রধান মিজান কসাই তার ব্যবসা চালিয়ে যেতে মরিয়া হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। একাধিকবার তার মাংসের দোকান থেকে মরা ও রুগ্ন গরুর মাংস ধ্বংস করে জরিমানা করা হলেও সে এযাত্রাকে বৈধ বলে চালিয়ে দেওয়ার পায়তারা করছে। ইতিমধ্যে সে বেনাপোলের একটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সন্মেলন করায় তার এই অপকৌশল অবলম্বনে আবারো ফুসে উঠেছে স্থানীয় সচেতন মহল ও ক্রেতারা।
জানা যায়, শুক্রবার ১৫ মে বেনাপোল বাজারের গোশ পট্টিতে মিজান কসাই সিন্ডিকেট প্রধান মিজান রুগ্ন গরুর পঁচা মাংস বিক্রী করছিল। এসময় মাংস থেকে দূর্গন্ধ ছুটলে ক্রেতারা বিক্ষোভ করে। পরে পোর্ট থানা পুলিশ ও পৌরসভার সেনেটারি কর্মকর্তাসহ বাজার কমিটি ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা পায়। এসময় বিক্রীর উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা প্রায় এক মন মাংস প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত জনগনের উপস্থিতিতে ধ্বংস করে মাটিতে পুতে ফেলে। যা নিয়ে দৈনিক স্পন্দন পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রকৃত ঘটনাকে ঢামাচাপা দিতে গতকাল মিজান কসাই স্থানীয় একটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। বলে, স্থানীয় সাংবাদিকরা চক্রান্ত করে তার দীর্ঘদিনের সুনাম ক্ষুন্ন করতে ভাল মাংসগুলো মাটিতে পুতে দিয়েছে এবং তার অনেক ক্ষতিসাধন করেছে।
এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মামুন খান বলেন, এদিন ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনা স্থল থেকে কিছু মাংস জব্দ করে মাটিতে গর্ত করে পুতে ফেলা হয়েছিল। যা খাওয়ার অনুপযোগী ছিলো বলে তিনি জানান। পরে মিজান কসাইয়ের অবৈধ ব্যবসা বৈধ বলে চালিয়ে নেওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজে অন্যায় করে খাওয়ার অনুপযোগী মাংস বিক্রি করে তা আবার বৈধ বলে সংবাদ সংবাদ সম্মেলন করা ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল বলেন, প্রথম দিন খবর পেয়ে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ, পৌর স্যানিটারি কর্মকর্তা ও বাজার কমিটি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে খাওয়ার অনুপযোগী মাংসগুলো ধ্বংশ করেছিল। পরে প্রাকৃতিক দূর্যোগময় সময়ের জন্য মানবিক কারণে এ যাত্রায় তাকে ক্ষমা করা হয়েছিল। কিন্তু কেন সে সংবাদ সম্মেলন করেছে তাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বেও মিজান কসাই মরা গরুর মাংস বিক্রিকালে হাতেনাতে আটক হয়েছিল। জরিমানা দিয়েছিল ৫ হাজার টাকা। এছাড়া সে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়ার জন্য মাদকের মতো মরণনাষী ব্যবসা করে। অতপর কয়েক হাজার পিস ইয়াবাসহ বিজিবির হাতে আটক হয়েছিল।