ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিস্তার প্রতিরোধে সরকারিভাবে সারা দেশে গণপরিবহন বন্ধ থাকা সত্তেও, সরকারের এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পণ্যবাহি ট্রাক, এম্বুলেন্সসহ বিভন্ন যানবাহনে কৌশলে যাত্রীদের আনা নেয়া করছে অনেকেই।
শনিবার সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ও রাণীশংকৈল উপজেলার কাতিহার এলাকায় ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে কয়েকটি পণ্যবাহি ট্রাক, মাইক্রোবাস ও এম্বুলেন্সে করে যাত্রী আনা নেয়া করতে দেখা যায়। এম্বুলেন্সে সুস্থ মানুষদের রোগী সাজিয়ে ও পণ্যবাহি ট্রাকে মালামাল পরিবহনের পরিবর্তে কৌশলে যাত্রী আনা নেয়া করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠাকুরগাঁও মটরপরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়নের একজন নেতা জানান, ঠাকুরগাঁও সদর সহ অন্যন্য উপজেলাতে গোপনে কিছু অসাধু ব্যাক্তি এই কাজ করছেন। তারা ঢাকা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও নারায়নগঞ্জে পৌছিয়ে দিতে যাত্রী প্রতি ২ হাজার থেকে ২৫ শতটাকা ভাড়া নিচ্ছে। প্রতিটি পণ্যবাহি ট্রাকে ১৫ থেকে ২০জন , এম্বুলেন্সে ৭ থেকে দশজন মানুষ বহন করছে। এছাড়াও রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজার থেকে রুপা পরিবহন প্রকাশ্যে কাউন্টারে ঢাকার টিকিট বিক্রয় করছেন। প্রধান সড়কের পরিবর্তে রুট হিসেবে তারা বাইপাস সড়ক ব্যাবহার করছেন। এছাড়া সড়কে পুলিশকে ম্যানেজ করে চলাচল করছে বেশ কয়েকটি গাড়ি।
ট্রাক ট্যাঙ্কলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জয়নুদ্দীন জানান, ঠাকুরগঁওয়ের ট্রাক ও ট্যাঙ্কলরি চালক শ্রমিকদের সরকারি নির্দেশ মেনে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ আইন অমান্য করে তাহলে সে দায়ভার কমিটি বা অন্যান্য শ্রমিকরা নেবে না।
মটরপরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আব্দুল জব্বার জানান, কিছু কিছু গাড়ি গোপনে যাত্রী আনানেয়া করছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে কে বা কারা আইন অমান্য করে এমন কাজ করছেন তা তার জানা নেই। সরকারি আইন ও সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে সকলকে একাধিকবার অবগত ও সতর্ক করা হয়েছে। আইন অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যাবস্থা গ্রহণ করলেও এবিষয়ে মটরপরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়ন হস্তক্ষেপ করবেনা।
এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মোহা. মনিরুজ্জামান বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের দুই প্রবেশদ্বারে ২৪ ঘন্টা পুলিশি প্রহরা রয়েছে। এ অবস্থায় কোনভাবেই জেলার মহাসড়ক ব্যবহার করে প্রবেশের সুযোগ নেই। তবে শোনা যাচ্ছে গ্রামের বিভিন্ন বাইপাস সড়ক ব্যবহার করে অনেকেই আসা যাওয়া করছেন। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সরকারি আইন মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে। পুলিশ সজাগ রয়েছে, আইন অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, কোনভাবেই যেন এই জেলাতে অন্য কোন জেলার মানুষ প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে ঠাকুরঁগাও সদর সহ অন্যান্য পাঁচটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গণস্বার্থে মোবাইকোর্ট পরিচালনা করে আইন অমান্যকারিদের শাস্তির আওতায় আনা হবে