খবর৭১ঃ
মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জে স্বাস্থ্য বিভাগের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারি করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এবং সংক্রামণ ঠেকাতে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালসহ তিনটি হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা। এতে ভুগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। চিকিৎসার জন্য বিত্তশালিদের প্রাইভেট হাসপাতাল থাকলেও বিপাকে পড়েছেন সাধারন মানুষরা।জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জে ইতোমধ্যে ৫২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
এরমধ্যে ১৮ জনই স্বাস্থ্য বিভাগের। মূলত ২০ এপ্রিল লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক ও একজন নার্স করোনায় আক্রান্ত হন। পরদিন ২১ এপ্রিল লাখাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরও একজন নার্স আক্রান্ত হন। ওইদিন রাতেই লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।এছাড়া চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও ব্রাদার এবং মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্রাদারও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সবশেষ ২৫ এপ্রিল একদিনেই হবিগঞ্জে ২১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। যাদের মধ্যে ১১ জনই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও ল্যাব টেকনিশিয়ানসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারি। ২৮ এপ্রিল আরও এক স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হন।
এ অবস্থায় করোনা সক্রামণ ঠেকাতে ২২ এপ্রিল রাতে জেলার ৩৩ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা অন্যতম ভরসা হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল ৩ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়। সেই লকডাউনের পরিমাণ বাড়িয়ে ৭ দিন করা হয়েছে। এতে বিপর্যয় দেখা দেয় চিকিৎসা সেবায়। জরুরী চিকিৎসা সেবায় বিত্তশালীরা প্রাইভেট হাসপাতালে ঝুঁকলেও বিপাকে পড়েন মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষরা।এদিকে, জরুরী চিকিৎসা সেবায় ১৭ এপ্রিল চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভার্চুয়াল হাসপাতাল খোলা হলেও প্রান্তিক পর্যায়ে সেটি ভুমিকা রাখতে পারেনি। ফলে সামান্য পরিমাণ দূর্ভোগও কমেনি বলে দাবি করেন অনেকে। এছাড়া, বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল খোলা কথা থাকলেও খোলা হচ্ছে না। তিন দিনের লকডাউন বাড়ানো হয়েছে ৭ দিনে।অন্যদিকে, হাসপাতাল খোললেও চিকিৎসক, নার্সসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারি করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধিন থাকার কারণে সেবা প্রদানে ঘটবে বড় ধরণের ব্যাঘাত।
সচেতন মহল বলছেন- এমনিতে হবিগঞ্জ জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগে যতেষ্ট পরিমাণে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারি নেই। এর মধ্যে ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে সাধারণ রোগীদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থা কতদিন থাকবে সেটিও জানেন না কেউই।এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল বলেন- বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে জীবাণুমুক্তকরণ ও অন্য আনুষাঙ্গিক কারণে সদর হাসপাতাল লকডাউন প্রথম দিকে ৩ দিনের জন্য লকডাউন করা হয়েছিল। কিন্তু সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে অতিরিক্ত নিরাপত্তার সার্থে সেটি ৭ দিন করা হয়েছে। এছাড়া দুটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেগুলো খোলার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।