খবর৭১ঃ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মাণাধীন দেশের বৃহত্তম করোনা আইসোলেশন সেন্টারটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চাইলে এখন বুঝে নিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এরইমধ্যে কনভেনশন হল ও ট্রেড সেন্টার মিলে ১৭০০ বেড বসানো হয়েছে। কিছু বেড অ্যাসেম্বল (বিভিন্ন অংশ যুক্ত করা) করে বসানোর কাজ বাকি। এছাড়া কয়েকদিন ঝড়-বৃষ্টির কারণে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় টয়লেট নির্মাণের টুকটাক কাজ ছাড়া তেমন কিছুই বাকি নেই।
সোমবার সকালে আইসিসিবিতে নির্মাণাধীন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেড সেন্টারের অধিকাংশ জায়গায় বসানো হয়েছে বেড ও আসবাব। চিকিৎসক ও নার্সদের কক্ষ, পর্যবেক্ষণ ডেস্ক, হেল্প ডেস্ক-সবকিছুই সাজানো হয়ে গেছে।
কর্মরত শ্রমিকরা জানালেন, আড়াইশ’র মতো বেড বাকি আছে অ্যাসেম্বল করতে। এগুলো হলেই বেডের কাজ শেষ। এছাড়া তাঁবুর বাইরে কয়েকটি টয়লেট নির্মাণে চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। শ্রমিকরা জানালেন, বৃষ্টি না এলে আজ দিনের মধ্যেই এগুলোর কাজ শেষ হয়ে যাবে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, দ্রুত হাসপাতাল নির্মাণ করতে আমরা রাত-দিন কাজ করেছি। তিন দিন বৃষ্টি হওয়ায় কাজগুলো পিছিয়ে গেছে। তবে বড় কোনো কাজ বাকি নেই। এই মাসের মধ্যে হাসপাতাল চালুর যে লক্ষ্য ছিল, আমরা এখনো সেখানেই আছি।
আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, হাসপাতালের কাজ বলা যায় শেষ। আমরা বসুন্ধরা থেকে চাইছি যত দ্রুত সম্ভব এখানে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা যায়। এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর উদ্বোধনের তারিখ দিলে টুকটাক যেটুকু কাজ বাকি আছে তা শেষ করতে আধা বেলার বেশি লাগার কথা না।
জসীম বলেন, গতকাল আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম উদ্বোধনের তারিখের ব্যাপারে। তারা বলেছে, শিগগির জানাবে। মূলত, হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্টিং স্টাফ এগুলোর ব্যবস্থা করে উদ্বোধনের তারিখ দেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আমরা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে দুই হাজার ১৩টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে এক হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরও ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) হওয়ার কথা রয়েছে।
করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে দুই হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে আইসিসিবিকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।