শেরপুর থেকে আবু হানিফ :
শেরপুর জেলায় ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ৬শ মুরগীর খামার রয়েছে। এসব খামার মালিকরা লাভবান হওয়ায় জেলায় অনেক বেকার লোকজন মুরগীর খামাড়ের দিকে ঝুকছিল। কিন্তু এবার করোনার কারণে সঠিক সময়ে মুরগী ও ডিম বিক্রি করতে নাপাড়ায় কমদামে বিক্রিকরতে হয়েছে খামরীদের। এছাড়া মরে গেছে অনেক মুরগী।
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা চৌরাস্তায় মো: ফারুক মিয়া প্রথমে ছোটকরে একটি মুরগীর খামার করে। লাভজনক হওয়ায় ব্যাংক থেকে তিন লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে খামার বড় করে। সাত হাজার পাকাস্তানী কক মুরগীর বাচ্চা লালন পালন করে বড় করে তুলে সে। বিক্রির সময় হলেই দেশে দেখা দেয় করোনার প্রাদূর্ভাব। সরকার দেশে দেয় লকডাউন। ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বন্ধ করে দেয় মুরগীর পাইকার। আর স্থানীয় মুরগী ক্রেতারাও মুরগীর দাম বলে অর্ধেকের কম। তাও আবার বাকীতে। সময় মতো তার মুরগী বিক্রি করতে না পারায় তার খামারের প্রায় ৩ হাজার মুরগী মারা যায়। এখনও দাম বলছে অনেক কম। এতে দিশে হারা হয়ে পড়েছে সে। ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণসহ তারা সব পূজিই শেষ হয়ে গেছে। তার প্রশ্ন এখন সে কি করবে ? অভিযোগ রয়েছে, করোনার কারণে প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে ডাক্তার না আসায়, মুরগী মারা যাওয়ার অন্য আরেক কারণ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের নাম্বারে একাধিকবার ফোন করেও তার কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
একই অবস্থা জেলার অন্য খামারীদেরও। অনেক খামারী তিনের একভাগ দামে মুরগী বিক্রি করে লোকসান দিয়ে এখন পূজি হারিয়ে নতুনকরে খামার করা বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। এরকমই একজন একই উপজেলার মো: লুৎফর রহমান। তিনি জানান এবার জেলার মুরগীর খামারীদের অন্তত ৩ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। খামারীদের দাবী তারা যদি সরকারী সহায়তা পায় অথবা সুদমুক্ত ব্যাংক ঋণ পায় তবে খামারীরা আবার খামারে মুরগী পালন শুরু করতে পারবেন। জেলার বিভিন্ন খামারে ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে একই অবস্থা।
এ বিষয়ে জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুল হাই বলেন, সরকার যে প্রনোদনা ঘোষনা করেছেন এর সুযোগ সুবিধা খামারীরাও পাবেন। আর আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে তাদের দাম নিশ্চিত করা যায়। তিনি আরো বলেন, চাইলে খামরীরা ঋণ পাবেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই স্থানীয় ব্যাংকগুলোকে চিঠিও দিয়েছেন।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, আমরা জানি খামারীরা তাদের মুরগী ও ডিমের দাম পাচ্ছেনা। তাদের বিষয়েও সরকার চিন্তা ভাবনা করছেন। আর আমরা শিশু খাবারের ত্রানের সাথে মুরগীর ডিম দিবো। একই সাথে তিনি বর্তমান অবস্থায় মুরগী গোস্তা ও ডিম খাওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
তবে স্থানীয়রা জানান, লাভজনক ব্যবসাটা যাতে চালু থাকে এ জন্য সরকারকে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কারণ মুরগীর খামারের সাথে এ এলাকার বেকার ছেলে মেয়েরা সম্পৃক্ত রয়েছে।