খবর৭১ঃ মানবদেহে প্রয়োগ করা প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আশাবাদী অক্সফোর্ড বিজ্ঞানীদের গবেষণার নেতৃত্বে থাকা সারা গিলবার্ট। তিনি জানান, ব্রিটেনে মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা এই ভ্যাকসিন প্রতিষেধকের কাজ করবে।
গতকাল লন্ডনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক মানবশরীরে করোনার ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেন। সেখানে প্রথমবারের মতো দুজনের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়।
ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের পর গবেষণার নেতৃত্বে থাকা ও ইবোলার প্রতিষেধক তৈরিতে দিশা দেখানো গিলবার্ট তার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সারা গিলবার্ট বলেন, ‘আমি এ ধরনের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করেছি। মার্সের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করেছি। এর কী ক্ষমতা তা জানি। আমার বিশ্বাস এই প্রতিষেধকে কাজ করবে।’
স্কুলজীবন থেকেই মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক থাকা গিলবার্ট ১৯৯৪ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। ২০০৪ সালে ভ্যাক্সিনোলজির রিডার হিসেবে নিয়োগ পান। গিলবার্ট জেন্নার ইনস্টিটিউট এন্ড ন্যুফিল্ড ডিপার্টমেন্ট অব ক্লিনিক্যাল মেডিসিনের ভ্যাকসিনোলজির অধ্যাপক।
২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে আফ্রিকায় কাঁপিয়েছিলো ইবোলা নামে ভাইরাস। মূলত পশ্চিম আফ্রিকায় প্রাদুর্ভাব হওয়া এই মহামারিতে ১৩ হাজার ৩১০ জন মারা গিয়েছিল। সেবার এই ভাইরাস রুখতে দিশা দেখিয়েছিলেন অক্সফোর্ড বিজ্ঞানী অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট।
এবার যখন সারা বিশ্ব রহস্যময় ভাইরাস করোনার তাণ্ডবে স্থবির, এই রোগ মোকাবিলায় দিশেহারা বিশ্বনেতারা, আবার আলো হাতে সেই সারাহ গিলবারট। তার নেতৃত্বে তৈরি হচ্ছে ক্রোনার ভ্যাকসিন, গতকাল যেটি মানবশরীরে প্রয়োগ করা হয়। এই প্রতিষেধকের সাফল্য নিয়ে ৮০ ভাগ নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা।
কোভিড-১৯ এর মোকাবিলায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন ‘চ্যাডক্স ১’ ভ্যাকসিন। বিজ্ঞানীদের দাবি সেপ্টেম্বর থেকে মিলবে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক। এই সময়ের মধ্যেই ১০ লক্ষ প্রতিষেধক তৈরির প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন তারা।
বিজ্ঞানী দলের এক সদস্য অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান হিল জানিয়েছেন, বিশ্বের সাতটি জায়গায় এই প্রতিষেধক তৈরির কাজ চলছে। প্রস্তুতকারী অংশীদার হিসেবে রয়েছে ব্রিটেনের তিনটি সংস্থা, ইউরোপের দুটি, চীনের একটি এবং ভারতের একটি সংস্থা।
ব্রিটেন ছাড়াও আমেরিকা এবং চীনের দুটি সংস্থাও এই প্রতিষেধকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে। মাত্র চার মাসে ভ্যাকসিন তৈরির পর প্রাণিদেহে প্রয়োগ এবং মানুষের শরীরে দেওয়ার ছাড়পত্র পাওয়া ভ্যাকসিন তৈরির ইতিহাসে নেই। এ পরীক্ষাটি সবার আগে শেষ হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।