খবর৭১ঃ শুক্রবার দুপুরে নিজের বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকের এই দুর্যোগে জাতি হিসেবে আমাদের বিভক্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ সময় বিভাজনের অনিবার্য পরিণতি ভাইরাসের ভয়ঙ্কর রূপ মোকবিলা করা যাবে না। জেনে শুনে আমরা যেনো এই মারাত্মক ভুলের ফাঁদে পা না দেই।’
‘মনে রাখতে হবে এই লড়াই আমাদের সবার বাঁচার লড়াই। এই লড়াইয়ে নিজে বাঁচতে হবে অপরকেও বাঁচাতে হবে। পরস্পর পরস্পরকে সুরক্ষা না দিলে আমাদের নিজেদের সুরক্ষাই হুমকির মুখে পড়বে।’
রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারির বাসভবনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘করোনা সংক্রমণে বিশ্বের দু’শ দশটি দেশ আজ আক্রান্ত। এর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৪ তম। ইউরোপ-আমেরিকার তুলনায় আমরা এখনো ভালো অবস্থানে রয়েছি। ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা মোকাবিলা করতে পারলে এই কালো মেঘ অচিরেই কেটে যাবে ইনশাল্লাহ।’
করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরে ঘরে সচেতনতার দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা যদি সকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, ঘরে থাকি; তাহলে ইনশাল্লাহ জয় আমাদের হবেই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী ইউনিয়ন পর্যায়ে ত্রাণ কমিটি গঠন করতে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ‘প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে ত্রাণ বিতরণের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
ত্রাণ বিতরণে কোনো প্রকার অনিয়ম দুর্নীতি সহ্য করা হবে না উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থানের কথা স্পষ্টভাবেই বলে দিয়েছেন। দলীয় পরিচয়েও কেউ ত্রাণ নিয়ে নয় ছয় করলে ছাড় দেয়া হবে না।’
করোনা মোকাবিলায় যারা সামনের সারিতে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন সেই ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী; প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী, গণমাধ্যম, জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান ওবায়দুল কাদের।
করোনায় সিলেটের মেধাবী চিকিৎসক ডা. মঈনের অকাল মৃত্যুতে সারাদেশের মতো আওয়ামী লীগও গভীরভাবে মর্মাহত বলে উল্লেখ করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তবে এটা খুবই দুঃখজনক যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডা. মঈনের মৃত্যু নিয়ে অহেতুক দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সমালোচনা করেছেন। আমি তাকে সবিনয়ে জিজ্ঞাসা করতে চাই, আজ সারা পৃথিবী করোনায় আক্রান্ত। এখানে ধনী-গরিব, চিকিৎসক-রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী কেউ রেহাই পাচ্ছে না। করোনা সংক্রমণ থেকে কেউই রক্ষা পাচ্ছেন না। দেশে দেশে এরই মধ্যে বহু চিকিৎসক প্রাণ দিচ্ছেন। সেহেতু স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা করে মোটেই সমীচীন নয় বলে আমি মনে করি।’
১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীন সরকার শপথ গ্রহণ করে। এ দিনই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। আজকের সারা বিশ্ব মহাদুর্যোগ করোনাভাইরাসের কারণে দিনটি পালনের আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে না পারলেও চেতনা ও বিশ্বাসে এই ঐতিহাসিক দিনটির তাৎপর্য চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।’