খবর৭১ঃ করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। কিন্তু তাদের এই মতের সঙ্গে একমত নন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তার মতে, বাংলাদেশের জিডিপি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এ পূর্বাভাস সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, কেননা এখনই এটা বলার সময় আসেনি।
সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের হার (জিডিপি) নিয়ে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ২ থেকে ৩ শতাংশ। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এ পূর্বাভাস সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, কারণ এখনই এটা বলার সময় আসেনি। বিশেষ করে অঙ্ক ধরে বলার উপযুক্ত সময় এটা নয়। আমাদের সামনে এখনও আট মাসের তথ্য রয়েছে। সেগুলো যাচাই করে কিছুদিন আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে এবার আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। ফলে বিশ্বব্যাংকের এই পূর্বাভাসকে আমি সময় উপযোগী বা পরিপক্ক কোনোটাই মনে করি না।
মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে সারা বিশ্বের মতো আমাদের জিডিপিও কমবে। তবে আমাদের এতটা কমবে না। কমপক্ষে ৬ শতাংশের ওপরে জিডিপি এ বছরও আমরা অর্জন করতে সক্ষম হবো। কারণ বাংলাদেশে করোনার প্রভাব পড়ার আগেই আমাদের অর্থবছরের আট মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে। বাকি আছে মার্চ-জুন চার মাস। এ সময়ে যদি আমাদের শূন্য কিংবা নেগেটিভ গ্রোথও হয় তারপরও আগের আট মাসে আমরা যা অর্জন করেছি সেটা ৬ শতাংশের বেশিই হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির চেয়ে আমাদের এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হচ্ছে দেশের মানুষের জীবন রক্ষা করা। তাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা, খাবারের জোগান দেয়াসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করাই এখন আমাদের মৌলিক কাজ।
মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধির প্রধান তিনটি খাত হলো- কৃষি, শিল্প ও সেবা। আমাদের কৃষিখাতে করোনাভাইরাসের তেমন কোনো প্রভাব পড়েইনি। এটা যদি দীর্ঘায়িত না হয় তাহলে কৃষিখাতে আমরা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সম্পূর্ণ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হবো। আর শিল্প খাতে কিছুটা প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এটা কাটানোর জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগও নিয়েছি। একইভাবে সেবাখাতেও কিছুটা প্রভাব পড়ছে। আমরা স্বীকার করছি প্রবৃদ্ধি কমবে, কিন্তু এতটা কমবে না। আল্লাহর কাছে আমাদের প্রার্থনা, তিনি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষকে এ মহামারি থেকে রক্ষা করুন।
প্রসঙ্গত, গতকাল রবিবার জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার কারণে বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধিতে ধস নামতে পারে। এ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ থেকে ৩ শতাংশ। তার পরের অর্থবছরে আরও কমতে পারে।