লোক সমাগম কমাতে মাছ- মাংস ও সবজি বাজার অন্যত্র স্থানান্তর,

0
551
লোক সমাগম কমাতে মাছ- মাংস ও সবজি বাজার অন্যত্র স্থানান্তর,

মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লোক সমাগম কমাতে সৈয়দপুর শহরের আধুনিক পৌর সবজি বাজার এবং মাছ- মাংসের বাজার অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন,পৌর পরিষদ ও থানা পুলিশের যৌথ সিদ্ধান্তে এ বাজার সরিয়ে নেয়া হলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা মানছে না কেউ। ফলে জনগনকে করোনা মুক্ত রাখতে প্রশাসনের প্রশংসনীয় এ সিদ্ধান্ত ভেস্তে যেতে বসেছে। সচেতনমহল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভয়াবহ করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুর আধুনিক পৌর সবজি এবং মাছ- মাংস বাজারে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা কেউ মানছিল না। ফলে শহরের ওই বাজারে মানুষজনের সমাগম দিনের পর দিন বেড়ে চলায় করোনা ভাইরাস আক্রান্তের মারাত্মক ঝুঁকি বাড়ছিল। এ অবস্থায় গত বুধবার সৈয়দপুর উপজেলা ও পুলিশ এবং পৌরসভা কর্তৃপক্ষের ত্রিপক্ষীয় এক যৌথ সভায় বাজার দুইটি সরিয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে ওইসব বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের ডেকে সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ব্যবসা পরিচালনার জন্য আহবান জানানো হয়। আর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্রেতা বিক্রেতাদের জন্য শহরের বাজার দুইটি অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হয় গত শুক্রবার থেকে। এর মধ্যে মুরগী ও মাংসের বাজারটি শহরের বিমানবন্দর সড়কের অফিসার্স কলোনীর ফাইভ স্টার মাঠে এবং মাছ ও কাঁচা সবজির বাজারটি শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের (বাংলা হাই স্কুল) মাঠে সরিয়ে নেয়া হয়। মূলতঃ শহরের বড় আকারের দুইটি মাঠে বসা বাজারে মানুষজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা সারবেন এমন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বাজার দুইটি স্থানান্তর করা হয়। গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বাজার দুইটিতে বাজার করতে আসা মানুষজনের ভিড় রয়েছে। কিন্তু মুরগী ও মাংসের বাজারে ব্যবসায়ীরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বেচা কেনার চেস্টা করছেন।

মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. নাদিম ওরফে ছটু বলেন, সরকারি নির্দেশনা পালনে তারা (ব্যবসায়ীরা) চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন মাংস ও মুরগির বাজারে পানি সমস্যা সমাধানে পৌরসভার পক্ষ থেকে টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে তিনি নিজেই সার্বক্ষণিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে
সবজি বাজারে এ নিয়ম মানার প্রবণতা দেখা যাচ্ছেনা। লক্ষ্য করা গেছে ক্রেতা সাধারণ একে অপরের একেবারে গাঁয়ে ঘেঁষে অবাধে কেনাকাটা সারছেন। এ নিয়ে সবজি বাজারের দোকানীদের নেই সচেতনতা। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রশাসন তৎপরতা চালালেও তারা চলে যাওয়ার পর ফিরে আসে আবার সেই পুরোনো অবস্থা। ফলে যে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা যেন পুরোপুরিই ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

এদিকে, ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, ফাউভ স্টার মাঠে স্থানান্তরিত মুরগী ও মাংস বাজারে ব্যবসায়ীরা ছাউনির ব্যবস্থা করলেও পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সবজি বাজারে কোন রকম ছাউনির ব্যবস্থা নেই। খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে ও বসে রোদে পুঁড়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা বেচাবিক্রির কাজ সারছেন। সেখানাে নেই পানি ও কোন রকম সুব্যবস্থাও। সেখানে প্রাকৃতিক কর্ম সারারও কোন ব্যবস্থা নেই। খুচরা সবজি বিক্রেতা মোস্তফা জানান, এখানে যে অস্থায়ী সবজি বাজার বসনো হয়েছে তাঁর কোন প্রচারপ্রচারণা করা হয়নি। ফলে অনেকেই এ বাজারে বিষয়ে কিছুই জানেন না। আর দোকানের ওপরে ছাউনির ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচা তরিতরকারি দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। আমরাও বেশি সময় ধরে কাঠ ফাটা রোদে বসে থাকতে পারছিনা

। অপর এক সবজি বিক্রেতা অভিযোগ করেন, সবজি বাজারের পাশপাশি মাংসের বাজার থাকলে ভাল হতো। এছাড়া শহরের নয়াবাজার থেকে পাইকারী কাঁচা পণ্যের বাজারটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়নি অদ্যাবধি। ফলে সেখানকার পাইকারী বিক্রেতারা সুযোগ নিয়ে খুচরা হিসেবে সবজি বিক্রি করছেন। এতে করে আমাদের সবজি অবিক্রিত থাকছে। বাজারে সবজি কিনতে আসা সাহিদ বলেন,বর্তমানে চৈত্র মাসের কাঠ ফাটা রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে বাজার করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। বয়স্কদের অবস্থা আরো কাহিল। আর আামদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, এখানে কাঁচা তরিতরকারি ও সবজি কেনাকাটার সেরে আবার দূরে রেলওয়ে ফাইভ স্টার মাঠে যেতে হচ্ছে মুরগী ও মাংস কিনতে। এতে আমাদের সময় ও শ্রম ব্যয় হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here