বিভিন্ন যানবাহন চালক, পথচারিসহ অসহায় মানুষজনের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ সৈয়দপুরের শিল্পপতি রাজু পোদ্দার

0
637
বিভিন্ন যানবাহন চালক, পথচারিসহ অসহায় মানুষজনের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ সৈয়দপুরের শিল্পপতি রাজু পোদ্দার

মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুরঃ
সৈয়দপুরে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রিক্সা,অটো রিক্সা,রিক্সাভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন চালক, যাত্রী ও পথচারিসহ বিভিন্ন এলাকার অসহায় নারী পুরষের মাঝে রান্নাকরা খাবার বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন সৈয়দপুরের বিশিষ্ট শিল্পপতি, নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের পরিচালক ও রয়্যালেক্স মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান রাজ কুমার পোদ্দার ওরফে রাজু পোদ্দার।
করোনাভাইরাস মোকাবেলা করতে গিয়ে অসহায় এসব মানুষজনের মাঝে গত রবিবার থেকে তিনি খিচুরি বিতরণ করে চলেছেন। আজ বৃহস্পতিবারও সৈয়দপুর শহরের নিয়ামতপুর বাস টার্মিনাল এলাকায় তার প্রতিষ্ঠান রয়্যালেক্স মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজেের সামনে খিচুরি বিতরণ করেন তিনি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খিচুরি বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন রাজু পোদ্দার। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দেখা যায় তার প্রতিষ্ঠানের সামনে দাড়িয়ে আছেন তিনি।

সামনে রয়েছে রান্না করা খিচুড়ির প্যাকেট। সকাল থেকে তিনি ওই সড়ক দিয়ে আসা যাওয়া করা রিক্সা,
অটোরিক্সা,রিক্সাভ্যান, সাইকেল চালকসহ এসব যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীদের ডাকছেন। এসময় তারা সেখানে এসে টেবিলের ওপর রাখা প্যাকেট করা খিচুড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন তার অনুজ রয়্যালেক্স মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর গোকুল কুমার পোদ্দার। প্রতিষ্ঠানের ভিতরে গিয়ে দেখা যায় অসংখ্য ডেগে রান্না চড়ানো।

বুটের ডাল,আলু ও নানা রকম মশলার সমন্বয়ে বাবুর্চি রান্নার কাজে ব্যাস্ত। পাশেই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মচারি রান্না করা খিচুড়ি প্যাকেট করছেন। আর এসব হচ্ছে অসহায় মানুষজনের মাঝে বিতরণের জন্য। পরে প্যাকেট করা খিচুড়ি নিয়ে রাখা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের মুল ফটকের সামনে। আর সেসব খিচুড়ির প্যাকেট টেবিল থেকে নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন যানবাহন চালক, যাত্রীসহ পথচারিরা। এছাড়া বাস টার্মিনাল এলাকায় অবস্থান করা পরিবহন শ্রমিকরাও সেখান থেকে নিয়ে যাচ্ছেন খিচুড়ি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে বিতরণ কার্যক্রম। তারাগঞ্জ উপজেলা থেকে রিক্সাভ্যান নিয়ে আসা চালক আজিজুল (৫৫) বলেন,সকালে বাড়ি থেকে নাস্তা করে বেড়িয়েছি। কিন্তু বাজারের সব দোকান বন্ধ থাকায় কিছুই খেতে পারেননি তিনি। বাড়ি ফেরার পথে রান্না করা খিচুড়ি পেয়ে দুপুরের খাওয়া সারবেন।
খিচুরী পেয়ে অটোরিক্সা চালক সামাদ (৪৫) বলেন, তিনি একটি খিচুড়ির প্যাকেট নিয়েছিলেন। যখন তিনি বলেন তার ঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে তখন ফ্যাক্টরী মালিক তাকে আরও দুটি প্যাকেট দিয়েছেন।

খিচুড়ি পেয়ে চামড়া গুদাম ক্যাম্প এলাকার হাসিনা(৩৪),
শুটকি বন্দরের সালাম(৩৪),আদানি মোড়ের কালাম(৫৮),রিক্সাভ্যান যাত্রী মহসেনা(৩২),ইদ্রিস (২৫), মিন্টু (৫৪), জমিলাসহ (৪৩) অনেকেই বলেন খিচুড়ি পেয়ে তাদের দুপুরের খাওয়াটা হবে। এটা যেন তাদের রিজিকেই ছিল। এসময় অনেকেই বলেন, অনেক ধনি আমরা দেখেছি। কিন্তু যিনি খাওয়া বিতরন করছেন তিনি অনেকের থেকে আলাদা। তারা এ কার্য়ক্রম চালানোর জন্য প্রতিষ্ঠান মালিক রাজু পোদ্দারের জন্য দোয়া করেন।খিচুড়ি বিতরণ প্রসঙ্গে কথা হয় রয়্যালেক্স মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান রাজ কুমার পোদ্দার ওরফে রাজু পোদ্দারের সাথে।

তিনি বলেন করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আজ অনেকেই অসহায়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষজনসহ সড়কে চলাচল করা অনেকেই অভুক্ত থাকেন। তাই মানবিক কারণে অসহায় এসব মানুষজনের পাশে সামান্য হলেও দাড়ানোর চেস্টা করছেন। এ কারণে গত রবিবার থেকে সকলের মাঝে খিচুড়ি বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি।তিনি বলেন তার প্রতিষ্ঠানে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রান্না করা হচ্ছে এসব খিচুড়ি। পরে প্রতিষ্ঠানের সামনে রান্না করা খিচুড়ি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সকলের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া শহরের মতির মোড়,আদানী মোড়,জুম্মাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নারী পুরুষের মাঝে বিতরন করা হয় খিচুড়ি। তার এ কার্যক্রম কতদিন থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here