খবর৭১ঃ
সুদীপ্ত শামীমঃ ‘সাহায্য পাই না, কি খায়া বাঁচি বাবা’ এমন কথাই বলছিলেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের চাচিয়া মীরগঞ্জ গ্রামের দু’জন অাশির্ধ্ব অসহায় নারী। করোনাভাইরাস কি তা জানে না তারা, এমনকি বুঝতেও পারে না এর ভয়াবহতা। শুধু জানে পেটে তিন বেলা ভাত জোটেনা তাদের। আহারই যেন তাদের একমাত্র চাওয়া। আহার পেলেই হবেন খুশি।
শতবর্ষী অসহায় বৃদ্ধা দিলজানের স্বামী ইদু শেখ মৃত্যুবরণ করেছেন স্বাধীনতার আগেই। দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ছিল তার পরিবার। হয়তোবা সুখের মুখ কখনো দেখেননি তিনি। বছর কয়েক আগে দু’টো ছেলেই দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এখন একমাত্র মেয়েটি তাকে দেখভাল করছেন। বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়েছেন দিলজান। হাঁটার শক্তি না থাকায় বিছানায় শুয়ে বসে কাটছে দিন। ক্রমান্বয়ে বাকশক্তি লোপ পাচ্ছে দিলজানের। আর অসুস্থতা ও চিকিৎসাহীনতার পাশাপাশি খাদ্যাভাব যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে তার নিত্য সঙ্গী।
অপরদিকে, একই পাড়ার সারফানের ( ৮০) স্বামী আজগর আলীরও বছর পঞ্চাশেক আগে মৃত্যু হয়েছে। তিন ছেলে নিয়ে অতিকষ্টে দিন চলছিল সারফান বেওয়ার। তিন ছেলেই পৃথক হওয়ায় মাকে দেখছে কেউই। নিরুপায় হয়ে পেট বাঁচানোর দায়ে ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু বয়সের কড়াল গ্রাসে এখন সোজা হয়ে দাঁড়াতে কিংবা হাঁটতেও পারেন না তিনি। শুধু গ্রামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল তার কর্মপরিধি। সাম্প্রতিক করোনা সংকটের কারণে মানুষ আর বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না তাকে। ভিক্ষায় যেতে না পেরে অনাহারে – অর্ধাহারে দিন কাটছে তার।
এ অবস্থায় ওই গ্রামের সবচেয়ে প্রবীণ দুই নারীর দেখা দিয়েছে খাদ্যাভাব। তিন বেলা পেট পুরে খেতে তারা চেয়েছেন খাদ্য সহায়তা। এ বিষয়ে কথা হয় সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নানের সাথে, ‘ তিনি বলেন- আমি ৩/৪টি নাম পেয়েছি, কাকে দেব? সবাই তো দরিদ্র। তাই আমি ওই ৩/৪ নাম নেইনি।’ ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, ‘তাদেরকে পাঠিয়ে দিলে সহায়তা দেয়া হবে।’